কোরআন অবমাননায় করুণ মৃত্যু! এলাকায় তোলপাড়

দিনাজপুর বিরামপুরে পবিত্র কোরআর শরীফ অবমাননা করায় আদিবাসী সাঁওতাল বিশু লাড়কা নামের এক ব্যক্তির করুন মৃত্যু ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার সকালে রণগ্রামে কবিরাজি চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিশু লাকড়ার মৃত্যু হয়। দুপুরে বিশুর লাশ নিজ বাড়িতে নিয়ে এলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

জানা গেছে, বিরামপুর উপজেলার পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নের জোতজয়রামপুর গ্রামের এতোয়া লাকড়ার ছেলে বিশু লাকড়া (৫৫) গত শুক্রবার (৫ জানুঃ) গ্রাম সংলগ্ন নদীতে মাছ ধরতে যায়। এক পর্যায়ে তার হাতের সাথে একটি কোরআন শরীফ উঠে আসে।

আরবীতে মুদ্রিত মুসলমানদের মহা পবিত্র গ্রন্থটিকে সম্মান না দেখিয়ে বিশু সেটিকে পা দিয়ে সরিয়ে রেখে বাড়ি চলে আসে। বাড়ি ফেরার পর বিশুর হাত-পা অবস হতে শুরু করে এবং কিছুক্ষণের মধ্যে তার মুখের কথা ও খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।

বিশুর বড় ছেলে লক্ষী লাকড়া ও শ্যালক দিলীপ টপ্য জানান, অবচেতন বিশু লাকড়াকে গত তিনদিন ধরে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করালেও ক্রমাগত তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

বিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান পারভেজ কবীর জানায় , লোকমুখে শুনেছি বিশু লাকড়া পবিত্র গ্রস্থ আল কুরআন অবমাননা করার কারনেই এই অবমৃত্যুর ঘটতে পারে বলে অনেকেই ধারনা করছে । পূর্বপশ্চিম

হালাল উপার্জনেও জিহাদের সওয়াব!………………

ইসলাম মানবজাতির জন্য সুখশান্তি ও শ্বাশত কল্যাণের এক কালজয়ী ধর্ম। ইসলাম এমন এক জীবনব্যবস্তা যেখানে মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক অর্থনৈতিক, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের যাবতীয় সমস্যার হিকমতপূর্ণ সমাধান দিয়েছে। মানুষের জন্য যা কিছু কল্যাণকর ও উপকারী তা গ্রহণে ইসলাম উৎসাহিত করেছে।

আর যা কিছু অকল্যাণকর ও ক্ষতিকারক তা গ্রহণে নিরুৎসাহিত করেছে। আল্লাহ মানবজাতিকে সৃষ্টি করে তাদের জীবন ও জীবিকার এক সুব্যবস্থা করে দিয়েছেন। মানবদেহের জীবনীশক্তি হিসেবে রক্তের ভূমিকা যেমন গুরুত্ব তেমনিভাবে মানবজীবনেও অর্থের ভূমিকাও তেমন তাৎপর্যপূর্ণ।

মহান আল্লাহ মানুষকে অর্থের গুরুত্ব বুঝানোর নিমিত্তে পবিত্র কুরআনে সালাতের পাশাপাশি যাকাত তথা অর্থের কথা ৮২ স্থানে উল্লেখ করেছেন। আর এই অর্থের জন্যই প্রয়োজন হয় মেধা, শ্রম উপযুক্ত ব্যবহার। জীবন নির্বাহের এ মাধ্যমটিই পেশা হিসেবে পরিগণিত। আল্লাহ ফরজ ইবাদত (যেমন : সালাত) সম্পন্ন হওয়ার সাথে সাথেই জীবিকা অন্বেষণ বের হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছন।

আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও নিজ হাতের উপার্জনকে সর্বোত্তম উপার্জন হিসেবে ঘোষনা দিয়েছন। আল্লাহ বলেন, ‘সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করবে যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সূরা জুমা, আয়াত : ১০) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম কুরতবি (রহ.) বলেন, ‘যখন নামাজ শেষ হয়ে যাবে, তখন ব্যবসায়িক কাজকর্ম ও অন্যান্য পার্থিব প্রয়োজনাদি পূরণে বেরিয়ে পড়।

ইসলামে কর্মবিমুখতার কোনো স্থান নেই। বরং জীবিকার অর্জনের জন্য ইসলাম যে কোনো হালাল শ্রমকেই উৎসাহিত করেছে। আমাদের নবী-রাসূলগণের জীবনী পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, তারা জীবিকা অর্জনের জন্য নানা কাজ করতেন। আদম (আ) কৃষি কাজ করতেন, দাউদ (আ.) কামারের কাজ করতেন। আমাদের নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও ব্যবসা করতেন।

আল্লাহ সমস্ত মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তারই এবাদতের জন্য। একজন মুমিনের ও সতত সাধনা থাকে তার জীবনের প্রতিটাক্ষণ আল্লাহর সন্তুষ্টির আলোকে অতিবাহিত করা। যাতে সে দুনিয়ায় কামিয়াব হয় এবং পরকালে পরম সুখের আকর জান্নাত লাভ করতে পারে। আর তার সেই ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই সে তার জীবনের প্রতিটি কর্ম আল্লাহর সন্তুষ্টি ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ মোতাবেক সম্পন্ন করে।

জীবন ও জীবিকার তাগিদে পৃথিবীর প্রতিটি মানুষকে কোনো না কোনো কাজ করতে হয়। আর মুমিনও এর বাইরে নয়। কিন্তু মুমিনের এই উপার্জন নিছক কোনো দুনিয়াবি কাজ নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রদর্শিত পথে উপার্জনের মাধ্যমে সে দুনিয়ার যাবতীয় প্রয়োজন মেটানোর পরও বিপুল পরিমাণ পুণ্যের অধিকারী হতে পারে।

এ প্রসঙ্গে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, এক লোক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট দিয়ে গেল। তখন সাহাবিরা তখন তার উদ্যম ও শক্তি লক্ষ্য করে বলল, হে আল্লাহর রাসূল, এই ব্যক্তি যদি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে থাকত? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদি সে ছোট বাচ্চার জন্য উপার্জন করতে বাহির হয় তাহলে সে আল্লাহর রাস্তায় আছে। যদি সে তার বৃদ্ধ পিতা-মাতার জন্য উপার্জন করতে বাহির হয় তাহলে সে আল্লাহর রাস্তায় আছে। যদি নিজেকে পবিত্র রাখার জন্য অর্থাৎ (হালাল উপার্জন দ্বারা জীবন পরিচালনা করা, অন্যের কাছে না হাত পাতা থেকে নিজেকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে) বাহির হয় তাহলে সে আল্লাহর রাস্তায় আছে। যদি সে লোক দেখানো ও অংহকার করার জন্য উপার্জনে বের হয় তাহলে সে শয়তানের পথে আছে। (তাবরানি)

এই হাদিস থেকে সহজেই বুঝা যায়, যদি কেউ নিজ সন্তানের পিতা-মাতা অথবা নিজেকে পবিত্র রাখার জন্য উপার্জন করতে বের হয়। সে আল্লাহর রাস্তায় তথা আল্লাহর দ্বীন কায়েমের পথে থাকলে যে নেকি হয় সে নেকি সে লাভ করবে। আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত অন্য হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘বিধবা ও মিসকিনের ভরণ-পোষণের জন্য চেষ্টাকারী আল্লাহর পথে জিহাদকারী অথবা সারারাত সালাত আদায়কারী ও সারাদিন সাওম পালনকারীর মত সওয়াবের আধিকারী।’ (সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম)।

উৎসঃ পরিবর্তন

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin