কোটা প্রথা থাকবেই, বাতিল হবে না: শেখ হাসিনা

মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলে-মেয়ে-নাতি-নাতনি সবাই সর্বাগ্রে অধিকার ভোগ করবে। তাদের জন্য চাকরির সুযোগ রাখা হয়েছে। কোটা প্রথা রাখতে হবে কারণ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের কারণে আমরা দেশ পেয়েছি। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চট্টগ্রামের পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিকেলে মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কারণেই তো এই চাকরি করতে পারছেন, সুতরাং তাদের ছেলে-মেয়েরা এ সম্মান পাবেন। কোটা পূরণ না হলে মেধাবীরা স্থান পাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলে দেশ উন্নয়নশীল হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপিত হলে দেশের সব মানুষকে যোগাযোগ ও সম্প্রচার সুবিধার আওতায় আনার সরকারের লক্ষ্য পূরণ হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় মানুষকে খুন করেছে, পুড়িয়ে হত্যা করছে। ২০১৪-১৫ সালে ৫শ’র মতো মানুষ পুড়ে মেরেছে জামাত-বিএনপি। ওরা কোনো মানুষ না। তারা আওয়ামী লীগ, শিক্ষক, সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে। নিরীহ মানুষ হত্যা করে কেউ বেহেস্তে যেতে পারবে না। নিরীহ মানুষ হত্যা করা ইসলাম সমর্থন করে না।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী থাকার অবস্থায় খালেদা কালো টাকা সাদা করেছে। তার ছেলেরা কালো টাকা সাদা করেছে। পরে তা বিদেশে পাচার করেছে। আওয়ামী লীগ সে টাকা দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, এতিমের নামে টাকা এসেছে। তা তারা ভোগ করেছে। আওয়ামী লীগ তাদের নামে মামলা দেয়নি, দিয়েছে খালেদা জিয়ার বেছে নেয়া তত্বাবধায়ক সরকার। পরে দুদক মামলা করে। আদালত রায় দিয়েছে। খালেদার সাজা হয়েছে। এখন তারা আইন মানে না, কোর্ট মানে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমগ্র বাংলাদেশে ইন্টারনেট সেবা চালু হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হলে ডিজিটাল বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা ১ কোটি ৩০ লাখ মায়ের হাতে উপবৃত্তির টাকা দিচ্ছি, যেন তাদের সন্তানেরা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে।
এর আগে চট্টগ্রামবাসীর জন্য তার উপহার স্বরূপ ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিস্থাপন ও ১৪টির উদ্বোধন করেন। বুধবার সকালে চট্টগ্রামে পৌঁছান। বিমান বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ উড়োজাহাজে করে তিনি আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রামের নেভাল একাডেমিতে পৌঁছান।

সেখানে নৌবাহিনীর অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন। দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনএ এবং ঈসা খাঁন প্যারেড গ্রাউন্ড বিএন ডক ইয়ার্ডকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা) প্রদান এবং বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য কর্মসূচিতে যোগদান করেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীর মারা যাওয়ার খবর গুজব

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন বলে গুজব উঠলেও জানা গেছে আন্দোলন সংশ্লিষ্ট কেউ মারা যায়নি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) এর কর্তব্যরত চিকিৎসক আলাউদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৫ জন এদের মধ্যে ৩ জনের আঘাত গুরুতর। ভর্তি হওয়া সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়: পুলিশের রাবার বুলেটে আবুবকর সিদ্দিক নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী চোখে গুরুতর আঘাত পেয়েছে। অজ্ঞাত এক শিক্ষার্থীর বুকে গুলি লেগেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। ৫০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছে।

এর আগে রোববার, রাত ৮টার দিকে শুরু হওয়া পুলিশের লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেলের কারনে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এসময় পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে।

আন্দোলনকারী শাহবাগ থানার সামনে, চারুকলার সামনে, পাবলিক লাইব্রেরির পেছনে, নজরুলের মাজারের সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে ও লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেয়।

পুলিশ টিয়ারশেল ও জলকামান ছুড়তে ছুড়তে তাদের টিএসসির দিকে ধাওয়া দেয়। তাদের পেছন পেছন পুলিশও টিএসসির দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশ নজরুলের মাজারের দিকে অগ্রসর হয়। এসময় পুরো এলাকা ধোয়ায় অন্ধাকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়।

এর আগে দুপুরের পর থেকেই সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা সংস্কারে চাকরিপ্রার্থী এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নেয়। এতে কার্যত অচল হয়ে যায় শাহবাগ এবং আশেপাশের এলাকা। সড়কের ওপর আড়াআড়ি বাস রেখে ব্যারিকেড দেয় আন্দোলনকারীরা।

হামলার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা টিএসসি এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর করেছে। পুলিশ অনেককে গ্রেফতার করেছে। সারা রাত তাদের আন্দোলন অব্যাহত ছিলো।
channelionline

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin