bnp-flag

কেন সফল হয়না বিএনপি`র আন্দোলন

নতুন আন্দোলনের স্বপ্নে বিভোর বিএনপি, প্রতিদিন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। ধর্ষণের প্রতিবাদে তারা সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছে। বাংলাদেশ ২০০৬ সালেরঅক্টোবরের পর থেকে ক্ষমতায় নেই বিএনপি। এবং প্রায় ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকা দলটি এখন অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। তারচেয়েও বড় কথা বিএনপি কি করতে চায় সেটা স্পষ্ট নয়।  

গত ১৪ বছরে দেখা গেছে বিভিন্ন ইস্যুতে বিএনপি আন্দোলনের চেষ্টা করছে কিন্তুব্যর্থ হয়েছে। এখন বিএনপি নতুন করে ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনের নামে সরকারকে কোনঠাসা করতে চাইছে। বিএনপি সরকারের পদত্যাগ দাবি করছে। সকলেই জানেন যে, ইস্যুভিত্তিকআন্দোলন কখনোই সফল হয় না।

কারণ হলো ইস্যুটি যখন মরে যায় তখন মানুষ ঘরে ফিরে যায়। আন্দোলন করার জন্য জনগণকে সম্পৃক্ত করা জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করা তেমন কোনো উদ্যোগ পরিকল্পনা এবং যোগ্যতা বিএনপি গত ১৪ বছর দেখাতে পারেনি। আমরা যদি দেখি যে বিএনপি আন্দোলনে কেন সফল হচ্ছে না?

তাহলে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ধর্ষণ উদ্বেগজনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং জন জীবনে শঙ্কা এবং অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। মানুষের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এটা অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই। ধর্ষণ বিষয়টি একটি সামাজিক ব্যাধি এবং বাংলাদেশের সব সময় এ ধরনের ব্যাধির সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে । এই ইস্যুটি যতটিনা রাজনীতিতার চেয়ে অনেক বেশি আর্থসামাজিক ইস্যু।মানুষ নানা রকম বাস্তবতায় নানা কারণে এ ধরনের বিকৃত মানসিকতার পরিচয় দেয় এবং আমাদের নৈতিকতার অবক্ষয় একটা উদাহরণ হল এ ধরনের  ঘটনাগুলো ঘটা।

এ ধরনের ঘটনায় সরকারের ওপর দায়দায়িত্ব তখনই বর্তাতো যদি সরকার ঘটনাকে আড়াল করতে চাইত। বিএনপি ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ইয়াসমিন হত্যার ঘটনাকে আড়াল করেছিল যার ফলে সারা দেশে এটি নিয়ে গণবিস্ফোরণ হয়েছে।

আবার যদি সরকার যারা ধর্ষক বানিপীড়ক তাদেরকে যদি বাঁচাতে চাইতো বা তারা দলীয় পরিচয়ে পরিচিতির জন্য যদি তাদের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতো তাহলে এরকম একটি সামাজিক ব্যাধি রাজনৈতিক আন্দোলনের রূপ গ্রহণ করতে পারতো। যেমন ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত মহিমা, ফাহিমাসহ বহু নারী ধর্ষিত হয়েছে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায়, রাজনৈতিক পরিচয় এবং রাজনৈতিক মদদে।

তখনকার সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ সমস্ত নিপীড়কদের এবং তাদেরকে সমর্থন করার একটা প্রবণতা ছিল। এবার ঘটনাটি উল্টো। যারাই ধর্ষণ করছে এবং এদের মধ্যে যাদের রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে তারা আওয়ামী লীগ হোক বা অঙ্গ সংগঠনের  হোক তাদেরকে সাথে সাথে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে না। যার ফলে ধর্ষককে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হচ্ছে এই অভিযোগও ওঠে না ফলে ধর্ষণ ইস্যুতে আন্দোলন রাজনৈতিক রুপ পাওযার কোনো কারণ এবং সম্ভাবনা নাই।

তৃতীয়ত, অনেক সময় দেখা যায় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ধর্ষণ এবং অন্যান্য রকম সামাজিক অপরাধ ঘটে। রাষ্ট্র এ ধরনের ঘটনাকে মদদ দেয় এবং রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে এধরনের ঘটনাগুলোকে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা হয়।

যেমন ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী জগদ্দল পাথরের মতো আমাদের বাংলাদেশের মানুষের ওপর চেপে বসেছিল। এবং সে সময় ৩লাখ মা-বোনের ইজ্জত এবং সম্ভ্রবহানি হয়েছিল রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মদদে পৃষ্ঠপোষকতায়।

বাংলাদেশে ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত অগ্নিসংযোগ লুটপাট ইত্যাদি হয়েছে। যা কিছু হয়েছে সব হয়েছে রাষ্ট্রীয় মদদে। আর এখানেরাষ্ট্র বা সরকারের অবস্থান সম্পুর্ন বিপরীতমুখী। রাষ্ট্র এই সব ধর্ষক এবং অপকর্মকারিদের বিরুদ্ধে শুণ্য সহিষ্ণুতা গ্রহণ করেছে।  

কাজেই রাষ্ট্র যদি এদেরকে মদদ না দেয়, রাষ্ট্র যদি নির্মোহ ভাবে অপরাধিদের শাস্তি দেয়তাহলে এটি কখনো রাজনৈতিক ইস্যু হতে পারে না। বিএনপি কখনো কোটা আন্দোলনে, কখনো নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মাধ্যমে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয়ার চেষ্টা করছে।

কিন্তু এর ফলে বিএনপির সক্রিয় এবং স্বাধীনএকটি রাজনৈতিক দল  হিসেবে তার অস্তিত ক্ষুন্ন করছে।বরং পরগাছাদের উপর নির্ভরশীল থেকে বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে জনগণের সামনে উপস্থিত হচ্ছে।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin