mirza-alamgir

কাঁদলেন মির্জা ফখরুল, কাঁদালেন সবাইকে

দলের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের কথা বলতে গিয়ে আবারও কাঁদলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ঠাকুরগাঁও জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেওয়ার একপর্যায়ে কেঁদে ফেলেন মির্জা ফখরুল।

দলের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আজকে একটা দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের বোনেরা-মেয়েরা আছে, যারা মাফ পায়নি, রেহাই পায়নি। সারা বাংলাদেশে হাজারো নেতা-কর্মীকে গুম করে দিয়েছে। তাদের বাচ্চারা এখনো বাবার পথের দিকে চেয়ে থাকে।’ এর পরেই গলা ধরে আসে মির্জা ফখরুলের। একপর্যায়ে কেঁদে ফেলেন তিনি।

পরে নিজেকে সামলে নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এমন একটা দুঃসময়, গ্রেপ্তার খুন চলছেই। এই সরকার, যারা আমাদের গণতন্ত্রের সব স্তম্ভকে ধ্বংস করে দিয়েছে, মানুষের অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়েছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আমাদের বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকারগুলোও কেড়ে নিয়েছে।’

দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা বলতে গিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মা-বোনদের কোনো নিরাপত্তা নেই। মানুষেরও নিরাপত্তা নেই। খবরের কাগজ খুললেই দেখবেন নারীদের লাঞ্ছনা করা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে। খবরের কাগজ খুললেই দেখবেন আমার ভাইকে গুলি করে মেরে ফেলা রাখা হয়েছে। গুম হয়ে গেছে। গত কয়েক বছরে হাজারো মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। পাঁচ শতাধিক মানুষকে গুম করে ফেলা হয়েছে।’ তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘আমরা কি সে জন্য দমে গেছি? আমরা গণতন্ত্রকে উদ্ধার করবই করব।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষে মানুষে সম্প্রীতি বিনষ্ট করছে। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করছে। শত নির্যাতন-নিপীড়নের পরও দেশের মানুষ জেগে উঠেছে।

এর আগে গত ৮ জুলাই ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে সদস্য সংগ্রহ অভিযানের আলোচনা সভায় ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে এবং ২০১৬ সালের ২৩ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘৩০টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল’ বন্ধের প্রতিবাদ জানাতে আলোচনা সভায় দলের নেতা-কর্মীদের বর্তমান (সেই সময়ের) অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দুপুর ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা পরিষদ মিলনায়তনে জাতীয় সংগীতের তালে তালে জাতীয় পতাকা ও দলীয় সংগীতের তালে তালে সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। সম্মেলন উদ্বোধন করেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস। সম্মেলনের প্রধান অতিথি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও কেন্দ্রীয় মাহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা সুলতানা আহমেদসহ সভানেত্রী জিবা খান, যুগ্ম সম্পাদিকা হেলেন জেরিন খান ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি সারওয়ার চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।

প্রথম অধিবেশন শেষে ফোরাতুন নাহারকে সভাপতি, শিরিন আকতারকে সাধারণ সম্পাদিকা ও রুবিনা আক্তার, নাজমা বেগম, সানজিদা ইয়াসমিনকে সাংগঠনিক সম্পাদিকা করে জেলা মহিলা দলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

প্রথম-আলো

দুদকের মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন মেয়র সাক্কু

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রথম মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। বর্তমানে সাক্কুর বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই। মঙ্গলবার ঢাকার ৮নং বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শামীম আহম্মদ তাকে অব্যাহতি প্রদান করেন।

এদিন মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির দিন ধার্য ছিল। সাক্কুর আইনজীবী মাসুদ আহম্মদ তালুকদার তার অব্যাহতির আবেদন করেন। অপরদিকে দুদকের আইনজীবী সাক্কুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে মামলায় অভিযোগ গঠন করার মতো কোনো উপাদান না থাকায় আদালত সাক্কুকে অব্যাহতি প্রদান করেন।

সাক্কুর আইনজীবী মাসুদ আহম্মদ তালুকদার জাগো নিউজকে বলেন, মেয়র সাক্কুর বিরুদ্ধে হয়রানির জন্য এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে তাকে অব্যাহতি প্রদান করেন। বর্তমানে সাক্কুর বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ৪ কোটি ৫৭ লাখ ৭১ হাজার ৯৩৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ১ কোটি ১২ লাখ ৪০ হাজার ১২০ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। পরে ওই অভিযোগে ২০০৮ সালের ৭ জানুয়ারি রাজধানীর রমনা থানায় দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক শাহিন আরা মমতাজ এ মামলা দায়ের করেন।

২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সাক্কুর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে দুদক।

জাগো নিউজ

আমরা এটা কখনও হতে দেব না: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বলেছেন, তার সরকার আগামী জানুয়ারি মাস থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যেককে ভাতা প্রদান করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা বিশেষ করে সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, আনসার-ভিডিপি এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’র (তৎকালীন ইপিআর) সদস্য যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তাদের ভাতা প্রদান করা হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০১৭’ উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা-উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে একথা বলেন। খবর বাসসের।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তারা সে সময় বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন বলে সে সময়ে তাদের ভাতা প্রদান করা হয়নি। তারা সকলেই প্রায় এখন অবসরে এবং তাদের পরিবারের সদস্যরাও সমস্যায় রয়েছেন… আমরা এদের সকলকেই আগামী জানুয়ারি থেকে ভাতা প্রদান করবো ইনশাআল্লাহ।’

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, সশস্ত্র বাহিনী দিবসে তিনি এখানে এলেই প্রতিবছর এই দাবি উঠতো। কাজেই আমরা এটি (ভাতা) প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে তাঁর সরকার সম্ভাব্য সবকিছু করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন এবং আত্মাহুতি দিয়েছেন তাদেরকে আমরা মর্যাদা দেয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।

সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মুহম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে সম্মানী চেক এবং মোবাইল ট্যাবসহ বিভিন্ন উপহার ৭ বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার এবং মুক্তিযুদ্ধে সম্মাননা পদকপ্রাপ্তদের মাঝে বিতরণ করেন।

‘শান্তিকালীন’ পদক ২০১৬ বিজয়ী ১২ জন এবং ‘অসামান্য সেবা’ পদক বিজয়ী ১৪ জনসহ সশস্ত্র বাহিনীর ২৬ জন সদস্যের মাঝে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী পদক বিতরণ করেন।

মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যার ফলশ্রুতিতে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা নিজের জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদান রেখে আমাদেরকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ উপহার দিয়েছেন।

জাতির বীর সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক মর্যাদায় পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং তাদের অবদানের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি দিতে তাঁর সরকার নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতার পরিমাণ ৯০০/- টাকা থেকে পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি করে ১০০০০ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে এবং ভাতা ভোগীর সংখ্যা এক লাখ থেকে বৃদ্ধি করে দ্বিগুণ অর্থাৎ দুই লক্ষে উন্নীত করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ৬৭৬ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে যথাক্রমে বীরশ্রেষ্ঠদের জন্য ৩০,০০০ টাকা, বীর উত্তমদের জন্য ২৫,০০০ টাকা, বীর বিক্রমদের জন্য ২০,০০০ টাকা এবং বীর প্রতীকদের জন্য ১৫,০০০ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিভিন্ন শ্রেণীর যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারবর্গের মাসিক রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতা সর্বনি¤œ ২৫ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাগণকে শিক্ষা ভাতা, কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে বিবাহ ভাতা, উৎসব ভাতা, দেশে বিদেশে চিকিৎসাসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রতিটি জেলায় ভবন নির্মাণ করা হবে। যার মধ্যে ৪৯টি জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন এবং হস্তান্তর করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩ থেকে মোট ১,০৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৭০টি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় ইতোমধ্যে ২৫১টি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অভূতপূর্ব অবদান কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করা আমাদের জাতীয় দায়িত্ব উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের ব্যাপারে আমাদের সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

বক্তৃতার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী মহান সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সকলকে জানাই শুভেচছা ও আন্তরিক অভিনন্দন জানান।

তিনি বলেন, ঐতিহাসিক এই দিনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর অকুতোভয় সদস্য এবং আপামর জনসাধারণ সম্মিলিতভাবে দখলদার পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ সূচনা করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিসেম্বরের শুরুতে যুক্ত হয় ভারতীয় মিত্র বাহিনী। সশস্ত্র বাহিনী, বাংলার মুক্তিপাগল জনতা ও মিত্র বাহিনীর একযোগে শত্রুকে আক্রমণ আমাদের বিজয়কে ত্বরান্বিত হয়। আমরা অর্জন করি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ।

সরকার প্রধান বলেন, আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষার সুমহান দায়িত্ব সশস্ত্র বাহিনীর উপর ন্যস্ত। এ পবিত্র দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আমাদের দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম, অবকাঠামো নির্মাণ, আইন-শৃংখলা রক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্বশীল অংশগ্রহণ বজায় রাখছে। আমি এজন্য সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদস্যকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন ও সব ধরনের কল্যাণমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ দেশের সকলবাহিনী এবং প্রতিষ্ঠান উন্নয়নের সুফল ভোগ করছে এবং বাঙালি জাতি হিসেবে আমরা আজ বিশ্বদরবারে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছি।

আমরা সেই সক্ষমতা এবং সামর্থ অর্জন করেছি এবং আমাদেরকে তা ধরে রাখতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাঙালি জাতি বিজয়ী জাতি এবং এ জাতি কখনও মাথা নত করে থাকবে না।’

তিনি বলেন, স্বাধীনতার এই গৌরবকে আমরা হারিয়ে ফেলেছিলাম ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর। কিন্তু, রসেই হারানো গৌরব আমরা আবার ফিরিয়ে এনেছি এবং বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার লক্ষই ছিল দেশের জনগণকে দারিদ্রের কষাঘাত থেকে মুক্ত করার, মানুষ উন্নত জীবন পাবে, উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পাবে, শিক্ষা পাবে এবং তারা মাথা উঁচু করে চলবে।

লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে বহুকষ্টে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা পিছিয়ে থাকতে পারি না,শহীদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। আমরা এটা কখনও হতে দেব না। জাতি মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানকে চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে এবং আমরা সোনার বাংলা গড়ে তুলবো যে স্বপ্ন একদিন জাতির পিতা দেখেছিলেন।

বক্তব্যের শেষ প্রান্তে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো তাদের ‘ওয়ার্ল্ড ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রসংগ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই স্বীকৃতির মধ্যদিয়ে এটাই প্রমাণ হয়েছে যে, ইতিহাসকে কখনও মুছে ফেলা যায়না এবং ইতিহাস তার স্থান একদিন ঠিকই করে নেবে। এটা এখন প্রমাণিত।

ওই ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে জাতির পিতা বাঙালি জাতিকে মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাঙালি জাতি ওই ভাষণের মাধ্যমেই মুক্তিযুদ্ধের সকল প্রকার দিক নির্দেশনা পেয়েছিল। অথচ ঐটা কোন লিখিত ভাষণ ছিল না, ছিল উপস্থিত বক্তৃতা।

তিনি বলেন, জাতির পিতা তার ভাষণের মাধ্যমে সমগ্র জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার এবং গেরিলা যুদ্ধের চূড়ান্ত নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর ক্ষমতা লিপ্সুরা ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্র করে এবং জাতির পিতার নামও তাঁর সকল অর্জনকে মুছে ফেলে দিতে চেয়েছিল।

তিনি বলেন, আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে কাজেই যারা ১৯৭৫ এর পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল তারা ইতিহাসের আস্তাকুড়ে পতিত হয়েছে,তারা কূপমন্ডকতায় ভুগেছে। তারা দেশের স্বাধীনতাকে ধূলিস্মাৎ করে সমগ্র দেশকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল।

উৎসঃ   আরটিএনএন

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin