ওয়ান-ইলেভেন আনতে চায় বিএনপি?

নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা নয়, বিএনপি চায় আরেকটি ওয়ান ইলেভেন। বিএনপির থিংক ট্যাংক এবং নেতারা মনে করছেন, আওয়ামী লীগকে হটিয়ে একটি নির্বাচন বা আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার পরিস্থিতি দেশে নেই।

ক্ষমতার চেয়ারে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মাঝখানে স্বল্প সময়ের মধ্যে একটি তৃতীয় পক্ষ থাকা উচিত। বিএনপির একাধিক নেতা এবং বিএনপি পন্থী বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে আলাপ করে বিএনপির এরকম মনোভাব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বিএনপির অন্যতম থিংক ট্যাংক এবং একজন সাবেক উপাচার্য মনে করেন, ‘নির্বাচনের আগে সময় আছে মাত্র ৪ মাস ‘ ৪ মাসের আন্দোলনের মাধ্যমে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় অসম্ভব। তাই শেষ পর্যন্ত যদি বিএনপিকে নির্বাচন করতেই হয়ে তাহলে তা করতে হবে বর্তমান সরকারের অধীনে।

ঐ বুদ্ধিজীবী মনে করেন, ‘আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন করে আর যাই হোক ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব হবে না। তিনি মনে করেন, এরকম নির্বাচনে বিএনপি ৭০ থেকে ১০০’র বেশি আসন পাবে না। প্রবীণ ঐ রাষ্ট্র বিজ্ঞানীর প্রশ্ন, বিএনপি কি আরও পাঁচ বছর বিরোধী দলে থেকে আওয়ামী লীগের সকল অপকর্মকে বৈধতা দেবে, নাকি ‘অন্য কিছু’কে স্বাগত জানাবে।

এই অন্য কিছু কি তা এই বুদ্ধিজীবী পরিষ্কার করেননি। তবে, বিএনপির একজন নেতা কোনো রাখঢাক না রেখেই বলেছেন, ‘আমরা ক্ষমতায় এলাম কিনা সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হলো আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। ঐ নেতা প্রশ্ন করেন, ১৯৯৬ এবং ২০০৬ এ আওয়ামী লীগ কী করেছিল?

নিজেই এর জবাব দিয়ে বলেন, ‘এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল, যেন বিএনপি তৃতীয় পক্ষের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। ৯৬ সালে আমরা বিচারপতি হাবিবুর রাহমানের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা ছেড়েছিলাম আর ২০০৬ এর পরিণতি ছিল ওয়ান-ইলেভেন।’

বিএনপি সমর্থক অন্য একজন সিনিয়র সাংবাদিক মনে করেন, ‘একটা তৃতীয় পক্ষ ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি উভয়ের জন্যই মঙ্গল।’ এই তৃতীয় পক্ষ কে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তৃতীয় পক্ষ একটি সর্বদলীয় সরকার হতে পারে, একটি সুশীল সমাজের সরকারও হতে পারে।’ তাঁর মতে, ‘যে দল যখন ক্ষমতায় থাকে, সেই দল সব সময় মনে করে ক্ষমতাচ্যুত হলেই তাঁকে অপর পক্ষ গলা চিপে ধরবে। সেজন্যই সে যখনই ক্ষমতায় যায় ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখত চায়। এটা আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি। কোনো দলেরই এক্সিট প্ল্যান নেই।

বিএনপির একজন নেতা বলেন, ‘সবাই বলছে, বিএনপি এবার নির্বাচনে যাবেই। বিএনপি যদি এবার নির্বাচনে যায়, তাহলে ২০১৪ সালে কেন গেল না? এবার নির্বাচনে বিএনপি কি বলে যাবে? আওয়ামী লীগকে বৈধতা দেওয়ার জন্য?‘ তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের একটা বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে’ বলে ওবায়দুল কাদের যে মন্তব্য করেছেন তা আংশিক সত্য।

নির্বাচনে একটি দল কেন যায়? ক্ষমতায় যাবার জন্যই তো? আপনি কি শুনেছেন, অন্যকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য কেউ নির্বাচন করে? তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের ঠিকই বলেছেন ২০১৪ আর ২০১৮ এক নয়। ২০১৪ তে যে এক তরফা নির্বাচন হয়েছিল, তা ২০১৮ তে হবে না। এমন নির্বাচন করতে চাইলে দেশে ওয়ান ইলেভেন অনিবার্য।’

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin