আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন সমঝোতার দরকষাকষি শুরু করেছেন এরশাদ। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দুই দলের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করছেন এরশাদের মনোনীত একাধিক প্রতিনিধি। জাতীয় পার্টি চাইছে ১০০ আসনে ছাড়, ক্ষমতায় গেলে এরশাদকে রাষ্ট্রপতি করা এবং জাতীয় পার্টি থেকে পাঁচজনকে মন্ত্রী বানানো।
আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা এরশাদের দর কষাকষির কথা স্বীকার করেছেন। জাতীয় পার্টির অন্যতম নেতা জিএম কাদের বলেছেন, ‘জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে উইনিং কম্বিনেশন। তাই যাঁরা জাতীয় পার্টিকে সর্বোচ্চ ছাড় ও সম্মান দেবে আমরা তাঁদের সঙ্গেই নির্বাচনী ঐক্য গড়ব।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচন আমরা ১৪ দলগত ভাবে করব।
তবে জাপার সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা হতে পারে। এ নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগকে হঠাতে আমরা জাতীয় ঐক্য গঠনের চেষ্টা করছি।’
প্রতিটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টি এখন একটি বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে। এটা বুঝতে পেরে সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদ তাঁর দলকে নিলামে তুলেছেন। জাপার ঘনিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এরশাদ ঘারোয়া আলাপচারিতায় বলেছেন, ‘সবাই আমাদের ক্ষমতায় যাবার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে, এবার আমরা তাঁদের সঙ্গেই যাব, যাঁরা আমাদের মূল্যায়ন করবে।’
তবে এরশাদ ৩০০ আসনেই প্রার্থীতা দেবেন বলে দলের সিনিয়র নেতাদের বলেছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সিঙ্গাপুরে তারেক জিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এরশাদের দুই দফা বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকের সূত্র ধরে ঢাকাতেও জাপার দুজন নেতার সঙ্গে বিএনপির কয়েক দফা কথাবার্তা হয়েছে। জাপা আগামী নির্বাচনে সমঝোতার শর্ত হিসেবে ১০০ আসনে ছাড় চেয়েছে।
ওই আসনে বিএনপি কোনো প্রার্থী দেবে না বা ‘ডামি’ প্রার্থী দেবে। ক্ষমতায় এলে এরশাদকে রাষ্ট্রপতি করার লিখিত সম্মতি চেয়েছে। আর ক্ষমতায় গেলে জাপা থেকে অন্তত পাঁচজনকে মন্ত্রী করার দাবি করেছে।
আওয়ামী লীগের সঙ্গেও গত সপ্তাহে দুই দফা নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে জাপা নেতাদের। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলাপে জাপা নেতারা ১০০ আসনে ছাড় চাইলেও রাষ্ট্রপতির বিষয়টি অনুচ্চারিত রেখেছে। তবে পাঁচ মন্ত্রীর প্রসঙ্গটি আওয়ামী লীগের কাছেও বলেছেন জাপা নেতারা।
আওয়ামী লীগ বিএনপি উভয় দলের শীর্ষ নেতারাই জাপার দাবিতে হতভম্ব। আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা এরশাদের দাবিকে অবাস্তব বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁর মতে, ‘এরশাদের দল ১০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো দল নয়। বড় জোড় ২৫ টি আসনে সমঝোতা হতে পারে।’ এদিক থেকে বিএনপিও একমত। বিএনপি মনে করে শেষ পর্যন্ত জাপা ২৫ থেকে ৩০টি আসনেই রাজি হবে। তবে, দুদলই মনে করেন এরশাদকে বিশ্বাস করা যায় না। শেষ পর্যন্ত এরশাদ কি করবে তা অনিশ্চিত।
বাংলা ইনসাইডার