বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে বহুমুখী যড়যন্ত্র চলছে। তার বিরুদ্ধে আদালতে মোট ৩৭টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি দুর্নীতির মামলা বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় করা।
বাকি মামলাগুলো গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, হত্যা, মানহানি ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে করা হয়েছে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার ‘জিয়া অরফানেজ ও চ্যারিটিবল দুর্নীতি’ মামলায় জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে বিশেষ আদালত।
বৃহস্পতিবার বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার ডাকা হরতালের কারণে এই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়া সময়মত আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় বিচারক তার জামিন বাতিল করে এই আদশ দেন।
যদিও এর আগে সকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান জানিয়েছিলেন হরতালের কারণে বেগম জিয়া দুপুর ২টার পর আদালতে উপস্থিত হবেন। তার আইনজীবিরা আদালতকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন কিন্তু বিচারক বেগম জিয়ার জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদেশ দেন।
আরো উল্লেখ্য সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিভিন্ন জনসভায় নেতা-কর্মীদের আগাম নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকার জন্য আহবান জানান। তার এই আগাম নির্বাচন সম্পর্কে প্রস্তুত থাকার ঘোষণা সরকারের পরিকল্পিত মনোভাবের বর্হিপ্রকাশ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এছাড়া বুধবার নির্বাচন কমিশন ভবনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি কে এম নুরুল হুদা জানান, ইসি আগাম নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত, সরকারের ওপর নির্ভর করে আগাম নির্বাচনের বিষয়টা, তারা যদি আগাম নির্বাচনের জন্য বলে, তখন আমরা পারবো, ৯০ দিনের সময় আছে, আমাদের ব্যালট বক্স যা কিছু আছে, দরকার শুধু পেপার ওয়ার্কগুলো করা লাগবে।
একদিকে আদালতে জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি, অন্যদিকে সরকারি দলের আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতির ঘোষণা, আবার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সম্মতিমূলক বক্তব্যসহ দ্রুততার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো শুধুমাত্র তাৎপর্যপূর্ণ-ই নয়, এটা ভিন্ন ইঙ্গিতপূর্ণও বটে। এমতাবস্থায় এখন কী করবেন খালেদা জিয়া?
আদালতের পেশকার মোকাররম হোসেন বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আগামী ৫, ৬ ও ৭ ডিসেম্বর যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত। আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাফাই সাক্ষ্যের জন্য একই দিন ধার্য আছে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার জানিয়েছেন, আগামী শুনানির দিনে খালেদা জিয়া অবশ্যই আদালতে হাজির হবেন।
সূত্র: আরটিএনএন