bnp_jamat

এখনও কেন বিএনপি-জামাতপন্থীরা?

সম্প্রতি বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ সেহাব উদ্দিনকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালকে অকার্যকর করা, হাসপাতালে রোগীদের সেবা না দেওয়া এবং অন্যান্য চিকিৎসকরা যেন সেবা দিতে না পারে সেই ব্যবস্থা করার জন্য তিনি কাজ করছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তার রিপোর্টের ভিত্তিতেই ওই হাসপাতালের ৬ জন চিকিৎসককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল। এই বরখাস্তের পর তারা যখন তাদের আসল অবস্থান প্রকাশ করা শুরু করেন তখন থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়ে। জানা যায় যে, ডা. মোহাম্মদ সেহাব উদ্দিন আসলে বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) নেতা। শুধু তা-ই নয়, ছাত্র অবস্থায় তিনি শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসেছে ১১ বছরের বেশি সময় হয়ে গেল। প্রশ্ন হলো, ১১ পরেও কেন ডা. মোহাম্মদ সেহাব উদ্দিনের মতো লোকেরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকবেন?

কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে যে করোনা মোকাবেলার জন্য এটি প্রথম এবং এখন পর্যন্ত মোটামোটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বিশেষায়িত হাসপাতাল। এই হাসপাতালের ওপর কেবল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নয়, সরকারের পারফরমেন্স অনেকাংশে নির্ভরশীল। তাহলে প্রশ্ন হলো, এই সময়ে এরকম একজন ব্যক্তিকে কে এই হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত করলো? যারা এটা করলেন তারা কি ডা. সেহাবের রাজনৈতিক ঠিকুজি জানতেন না?

শুধু ডা. সেহাব একা নন, আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে, বিভিন্ন অধিদপ্তরে, বিভিন্ন জায়গায় এরকম ঘাপটি মেরে আছে, বিএনপি-জামাতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। যারা কখনোই আওয়ামী লীগ করতেন না, বরং তাদের ছাত্রজীবনে বা শিক্ষা জীবনে মূল কাজ ছিল আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করা এবং তারা এখনও সরকারের বিভিন্ন তথ্য হেরফের করছেন এবং সরকার যেন ব্যর্থ হয়, সে লক্ষ্যেই কাজ করছেন। তার বড় প্রমাণ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল।

তাহলে আমাদের প্রশ্ন এই লোকগুলো এখনও কীভাবে আছে এবং কে তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে? নিশ্চয়ই ডা. মোহাম্মদ সেহাব উদ্দিনকে কেউ নিয়োগ দিয়েছে, কেউ তাকে তত্ত্বাবধায়ক বানিয়েছে। কিন্তু তারা কারা?

আমরা এখন দেখছি যে, সরকারের প্রশাসনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এমনকি অনেক জায়গায় নেতৃত্ব পর্যায়েই এরকম বিএনপি-জামাতের লোক রয়েছে। আমরা জানি যে, তাদের মধ্যে অনেকেই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগও পেয়েছেন সরকারের কৃপায়।

প্রশ্ন হলো, এই জামাত-বিএনপিকে পুনর্বাসন কারা করছে? একজন সরকারি কর্মকর্তা রাজনৈতিক দলমতের উর্ধ্বে কাজ করবেন। তিনি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। ছাত্রজীবনে তিনি যে রাজনীতিই করুন না কেন, কর্মজীবনে এসে তিনি তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু গত ১১ বছরে সে ধারাটি বজায় থাকেনি।

বরং যে যত বেশি আওয়ামী লীগার সে তত বেশি পদোন্নতি পাবে, এই ধারা চালু হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে সকলেই আওয়ামী লীগ হওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। আর আওয়ামী লীগ হওয়ার জন্য সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে গিয়ে তারা বিভিন্ন আওয়ামী লীগ নেতা এবং প্রশাসনে আওয়ামী লীগ নেতা বা প্রশাসনে আওয়ামীপন্থীদের কাছে ধর্ণা দিয়েছেন এবং তাদের কৃপায় আওয়ামী লীগার হয়ে গেছেন।

এরাই এখন সুযোগ খুঁজছেন। এরাই এখন সরকারের সংকটকালে সরকারকে বিপদে ফেলার পায়তারা করছেন। আমাদের প্রশ্ন, এখনও কেন বিএনপি- জামাতপন্থীরা প্রশাসনে রয়েছে? আমাদের যদি করোনা মোকাবেলায় সফল হতে হয়, তাহলে প্রথম এ ধরনের ঘাপটি মেরে থাকা অপেশাদার সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন, তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে করোনা মোকাবেলা কেন, কোনো সংকট মোকাবেলাই সরকারের পক্ষে সম্ভব হবে না।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin