একটি ভুলের অপেক্ষায়

রোববার রাতের মধ্যেই সর্বত্র ছড়িয়ে পরে খবর। বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতা তার বাসায় কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এসময় টেলিফোন আসে তার কাছে। বিএনপির আরেক নেতা ফোনে জানান, ইরফান সেলিমের ঘটনা। এটাও জানান, আক্রান্ত ব্যক্তি একজন নৌবাহিনীর অফিসার। উল্লাসে ফেটে পরেন ঐ বিএনপি নেতা।

উপস্থিত কর্মীদের বলেন ‘এবার সরকার কেমনে বাঁচবে।’ দেরী না করে লন্ডনে ‘ভাইয়া’কে ফোন করেন ঐ নেতা, পুরো ঘটনা জানান। সাথে সাথে নিজের মন্তব্যও জুড়ে দিতে ভুল করেন না। বললেন ‘সিনহার ঘটনার পর তো পার পাইছে, এবার আর পাবে না।’ লন্ডনে পলাতক বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও উল্লাস চেপে রাখলেন না।

তাকে ‘আপডেট’ করতে বললেন। কিন্তু সকালে উঠেই বিএনপি নেতাদের মোহভঙ্গ  হলো। বিএনপির একজন নেতা বলছিলেন ‘প্রধানমন্ত্রী যে এভাবে দ্রুত একজন নেবেন ভাবতেও পারি না। একজন এমপির বাসা এভাবে তল্লাশির কথা বিএনপি স্বপ্নেও কখনো চিন্তা করতো না।’

ইরফান সেলিমের অপকর্মে সরকার বিপদে পরবে, এমন ভাবনার খানিক আবেশে থাকা বিএনপির স্বপ্নভঙ্গ হলো। উল্টো প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরকারের তড়িৎ ব্যবস্থা জনগনের মধ্যে সরকারের, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর ইমেজ বাড়ালো। বিএনপির একটি ভুলে অপেক্ষা আরো দীর্ঘ হলো।

‘ভুলের অপেক্ষা’র শুরু ২০০৯ সালে। ২০০৮ এর নির্বাচন ভরাডুবি হয় বিএনপির। এরপর সংসদীয় দলের প্রথম বৈঠকে বেগম জিয়া বললেন ‘ওরা ভুল করবেই। একটি ভুল করলেই এই সরকার থাকবে না।’ এর পর পরই বিডিআর বিদ্রোহ।

বেগম জিয়া দলের নেতাদের জানিয়ে দিলেন, সরকারের পতন হচ্ছে। কিন্তু সাহসের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করলেন শেখ হাসিনা। এরপর এলো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। বিএনপির নেতারা বললেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করলে আওয়ামী লীগেরই কবর রচিত হবে।’ যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সা.কা চৌধুরী দম্ভ করে বললো ‘আমার বিচার করলেই এই সরকারের পতন হবে।’ একে একে সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার হলো।

২০১৪র নির্বাচনের আগে বিএনপির অনেক নেতাই বেগম জিয়াকে পরামর্শ দিলেন, নির্বাচনে যেতে। কিন্তু বেগম জিয়া দলের নেতাদের বললেন ‘বিএনপি ছাড়া নির্বাচন করলে সরকার ৭ দিনও টিকবে না। ঐ নির্বাচনের পর প্রায় সাত বছর হতে চললো।’

করোনা সংক্রমনের পর বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ভবিষ্যত বানী করেছিলেন, এবার অর্থনৈতিক সংকটে সরকারের পতন হবে।’ কোথায়? মেজর সিনহা, ধর্ষণ, সব ঘটনায় বিএনপির ক্ষনিকের আনন্দ ম্লান হয়ে যায় শেখ হাসিনার দৃঢ় এবং সঠিক সিদ্ধান্তে।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin