তিনটি শর্ত পূরণ করলেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ। শর্ত তিনটি হলো- সংসদ ভেঙে দেয়া, বিরোধী দলের নেতাদের মামলাগুলো প্রত্যাহার বা স্থগিত এবং বিরোধী দলের প্রধানদের সাথে আলোচনা করে ইতিবাচক সিদ্ধান্তে আসা।
জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে শুক্রবার বিকেলে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৩তম জন্মদিন উপলক্ষে সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী দল।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে এমাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ করতে প্রথম শর্ত বা পদক্ষেপ হবে জাতীয় সংসদকে ভেঙে দেয়।তা না হলে নির্বাচন যথার্থ হবে না। বর্তমান সংসদকে অক্ষুণ্ন রেখে নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলা বাতুলতা-অর্থহীন ও নিরর্থক। যেসব দেশে সংসদীয় ব্যবস্থা আছে সেসব দেশেই এরকম হয়। সংসদীয় ব্যবস্থা জাপানে, কানাডা ও ভারতে আছে। সব জায়গাতেই নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় শর্ত- বর্তমানে প্রায় ২৫ হাজার মামলায় জড়িত আছে বিরোধী দলের প্রায় আড়াই লাখ মানুষ। এই আড়াই লাখ মানুষকে ভোটের জন্য কথা বলতে হবে, তাই তাদের বিরুদ্ধে সব মামলা তুলে নিতে হবে। কারণ এর বেশিরভাগই মিথ্যা মামলা। আর যারা প্রার্থী হবেন তাদের তো ভোট চাইতে যেতে হবে। মামলাগুলো তুলে না নিলে নির্বাচন পর্যন্ত স্থগিত রাখতে হবে। এছাড়া কোনো পথ নেই। অনেক মামলা আছে যেগুলো তুলে ফেলা যায় না, সেগুলো স্থগিত রাখা উচিত।
তৃতীয় শর্ত- প্রধানমন্ত্রীর নেত্রীত্বে সকল দলের প্রধানদের সাথে আলোচনা করা এবং ইতিবাচক সিদ্ধান্তে আসা। এই তিনটি শর্ত বাদ দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করেন এই বুদ্ধিজীবী। তিনি আরও বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনী পরিবেশ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেই তৈরি করতে হবে। এটা বিরোধী দলের দায়িত্ব নয়। এটা ক্ষমতাসীন দলের দায়িত্ব। এটা করতে যদি ক্ষমতাসীন দল ব্যর্থ হয়, তাহলে এই ব্যর্থতা জাতির ব্যর্থতা এবং জাতীয় পর্যায়ের লজ্জা।
দেশে বর্তমানে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই জানিয়ে এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলেন, ‘একটা নতুন রাষ্ট্র এখনো ৫০ বছর পূর্ণ হয়নি, এই রাষ্ট্রে গণতন্ত্র ঠিকমতো কার্যকর হবে না- এটা ভাবলেই আমাদের লজ্জা হয়। এটা হবে না? ৩০ লাখ শহীদের রক্ত গেল কোথায়? তাহলে আমরা করলাম কি? এক্ষেত্রে (গণতন্ত্র ঠিকমতো কার্যকর করতে) প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব অনেক বেশি।’
একই সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে সরকার বেসামাল ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই আতঙ্কিত সরকারকে বিদায় করতে হবে। এ সময় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বেগম জিয়া যখন আন্দোলনের ডাক দেবেন তখন সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হাজী মো. লিটনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলতাব হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, জিনাপের সভাপতি মিয়া মোহাম্মাদ আনোয়ার, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
উৎসঃ poriborton
কোন রাজনৈতিক জেটের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, নির্বাচনে ও অংশ নিবে না হেফাজত
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, হেফাজত কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয়, রাজনৈতিক কোনো মোর্চার সাথে হেফাজতের কোনো সম্পর্ক নেই। হেফাজত কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। কাউকে কোনো নির্বাচনে মনোনয়ন দেবে না।
তিনি বলেন, হেফাজত মুসলমানদের ইমান-আকিদা রক্ষার সংগ্রামের একটি অরাজনৈতিক বৃহত্তম সংগঠন। শুক্রবার হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে উদ্যোগে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ মাঠে দু’দিনব্যাপী শানে রেসালত সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের মহাসচিব হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, নির্যাতিত হয়ে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের নাগরিকত্ব দিয়ে ওই দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মুসলিম দেশগুলোকে ভূমিকা রাখবে হবে। এসব দেশগুলো নির্যাতিত মিয়ানমারের মানুষের পাশে দাঁড়ানোরও আহ্বান জানান।
চার অধিবেশনের সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, মাওলানা হাফেজ তাজুল ইসলাম ও মাওলানা লোকমান হাকিম। সম্মেলনে বক্তব্য দেন মাওলানা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী, মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, মাওলানা মুফতি আহমদুল্লাহ, মাওলানা হাফেজ নুরুল ইসলাম, মাওলানা ওবাইদুর রহমান খান নদভী, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা শেখ আহমদ, মুফতি রহিমুল্লাহ, মাওলানা ফোরকান আহমদ, মাওলানা জিয়াউল হোসাইন ও মাওলানা সলিমুল্লাহ।
শীর্ষনিউজ