khaleda_zia

ঈদের পরই স্বরূপে আসছেন খালেদা?

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার যোগাযোগ এখন নিয়মিতই হচ্ছে। যদিও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এ ধরনের যোগাযোগের ব্যাপারটা পুরোপুরি অস্বীকার করা হচ্ছে। কিন্তু খালেদা জিয়ার কারামুক্তির পর থেকেই বিএনপির মধ্যে যে চাঞ্চল্য এবং গতি ফিরে এসেছে তা উপলব্ধি করার জন্য বিশেষজ্ঞ হবার দরকার নেই।

যদিও খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে এখন বলা হচ্ছে যে, বেগম খালেদা জিয়া তার চিকিৎসা নিয়েই ব্যস্ত আছেন। কোনো ধরনের রাজনৈতিক বক্তব্য বা কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রকাশ্যে আসার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি। কিন্তু ভেতরের খবর হলো, বেগম খালেদা জিয়া আসলে মোটেও তেমন অসুস্থ নন, তার যে অসুখ-বিসুখগুলো ছিল তা কারাগার থেকে বের হবার পর মানসিক প্রশান্তির কারণে সেগুলো আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে গেছে।

তার এখন ব্লাড স্যুগার ছাড়া কোন সমস্যাই নেই। হাত-পায়ে যে ব্যাথাগুলো ছিল সেগুলো নিয়মিত ফিজিওথেরাপি নেয়ার মাধ্যমে কেটে গেছে। বেগম খালেদা জিয়া তার ফিরোজার বাসায় পরিবার-পরিজন নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন এবং রাজনৈতিক ব্যাপারে নির্দেশনা দিচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, নিজে প্রকাশ্যে না এলেও যা কিছু এখন ঘটছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বা রুহুল কবীর রিজভীরা যা কিছু বলছেন, সবকিছু বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে। বিএনপির একাধিক নেতারা স্বীকার করেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়া প্রকাশ্যে আসুক না আসুক, তিনি জেল থেকে বের হয়েছেন এতেই বিএনপি নেতৃবৃন্দ উজ্জীবিত হয়েছে। তারা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি মনোবল পাচ্ছে।

বিএনপির একজন নেতা আলাপকালে বলেছেন যে, করোনা সঙ্কটের সময় যদি বেগম খালেদা জিয়া জেলে থাকতেন তাহলে হয়তো আমরা কিছুই করতাম না। শুধুমাত্র বেগম খালেদা জিয়ার কী পরিস্থিতি হচ্ছে, কী অবস্থা হচ্ছে, সেটা নিয়েই আমরা উদ্বিগ্ন থাকতাম। কিন্তু তিনি এখন বাইরে থাকার ফলে নেতাকর্মীরা অনেক বেশি আশাবাদী হয়েছেন এবং বেগম খালেদা জিয়া কোনকিছু করুক না করুক তিনি যে বাইরে আছেন এটাই বিএনপির জন্য বড় পাওয়া বলে মনে করছেন ঐ নেতা।

বিএনপির একাধিক নেতা মনে করছেন যে, সরকারের জন্য সামনে কঠিন সময় আসছে এবং সরকার যেভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে, তাতে সঙ্কট আরো ঘনীভূত হবে।

বিএনপির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছেন যে, সরকার করোনা সঙ্কট এবং করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় যেভাবে এগোনো দরকার সেভাবে এগোতে পারছে না। এর ফলে খুব শীঘ্রই জনগণের কাছে এই সরকার ব্যর্থ সরকার হিসেবে প্রতিপন্ন হবে এবং তখন বিএনপি সুযোগ নিতে চাইবে।

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে বিএনপি এবং নানা রকম কথাবার্তা বলে সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে ক্ষেপিয়ে দেওয়ার একটি প্রক্রিয়াও হাতে নিয়েছে বিএনপি।

বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করোনা নিয়ে নানারকম গুজব এবং মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার কৌশল বিএনপি সফলভাবে কার্যকর করছে। জনগণের মধ্যে করোনা নিয়ে নানারকম বিভ্রান্তি এবং অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। আর এগুলোর সবই সম্ভব হচ্ছে কারণ বেগম খালেদা জিয়া এখন জেলের বাইরে আছেন বলে মনে করছে বিএনপির নেতৃবৃন্দ।

বিএনপির একজন নেতা বলেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়া দলের নেতৃবৃন্দকে নিয়মিত ত্রাণ বিতরণ এবং সরকারের সমালোচনা করতে বলেছেন। শুধুমাত্র করোনা সংক্রান্ত ব্যর্থতা নিয়ে কথাবার্তা বলতে বলেছেন এবং এই বাস্তবতায় বিএনপি এখন করোনা কেন্দ্রিক বিষয়েই কথা বলছে।

বিএনপি নেতারা মনে করছে যে, ঈদের পরপরই পরিস্থিতি আরো নাজুক হয়ে যাবে। এই সময়ে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার যে ব্যর্থ হয়েছে তা দৃশ্যত স্পষ্ট হবে। তখন সরকারবিরোধী একটি প্রকাশ্য অবস্থানে আসবে বিএনপি। তখন বেগম খালেদা জিয়া হয়তো স্বরূপে আসবেন।

বিএনপি নেতারা অবশ্য এটা স্বীকার করেছেন যে, যতক্ষণ পর্যন্ত সরকারের বিরুদ্ধে বড় কোন আন্দোলনের ক্ষেত্র প্রস্তুত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়া স্বরূপে আসবেন না, প্রকাশ্যেও আসবেন না।

সূত্র: বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin