ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচনে (২০১৮) আওয়ামী ও বাম সমর্থিত শিক্ষকদের প্যানেলের ভরাডুবি ঘটেছে। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকদের প্যানেল নিরঙ্কুশ জয়লাভ করেছে।
নির্বাচনে সভাপতি পদে হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানূর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক পদে দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ অলী উল্লাহ নির্বাচিত হয়েছেন।
বুধবার সকাল সাড়ে নয়টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত শিক্ষক সমিতির নির্বাচন অনুষদ ভবনের ৪২৭ নম্বর কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। ভোট গণনার পর রাত নয়টার দিকে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন ফল ঘোষণা করেন।
এ বছর শিক্ষক সমিতি নির্বাচনে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকরা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্যানেল নামে এবং আওয়ামী ও বাম সমর্থিত শিক্ষকরা বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, প্রগতিশীল চেতনায় বিশ্বাসী প্যানেল নামে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।
নির্বাচনে ১৫টি পদের ১৪টিতে জয়লাভ করেছে বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষক প্যানেল। সভাপতি হিসেবে অধ্যাপক ড. মিজানূর রহমান ১৬৪ ভোট পেয়ে এবং সাধারণ সম্পাদক পদে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ অলী উল্লাহ ১৪৪ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন।
এ ছাড়া সহসভাপতি পদে একই প্যানেলের অধ্যাপক ড. শহীদ মোহাম্মদ রেজওয়ান, যুগ্ম সম্পাদক পদে অধ্যাপক ড. এ. এস. এম. আইনুল হক আকন্দ, কোষাধ্যক্ষ পদে অধ্যাপক ড. মো. আসাদ-উদ-দৌলা (বুলবুল), সদস্য পদে অধ্যাপক ড. মো. আবু সিনা, অধ্যাপক ড. মোহা. তোজাম্মেল হোসেন, অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. মতিনুর রহমান, অধ্যাপক
ড. মো. নজিবুল হক, অধ্যাপক ড. নূরুন নাহার, অধ্যাপক ড. মো. ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. রাশেদুজ্জামান, অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও অধ্যাপক ড. মো. জাহিদুল ইসলাম নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া আওয়ামী প্যানেল থেকে সদস্যপদে শুধু মো. আনিচুর রহমান নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয় ৩৫২ শিক্ষকের মধ্যে ২৯২ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। বৈধ ভোট ছিল ২৯০টি।
নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন। এছাড়াও সহকারী নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন ড. লুৎফর রহমান ও মো. সাজ্জাদুর রহমান টিটু।
ইবি’র ভর্তি পরীক্ষা বাতিল অবৈধ ঘোষণার রায় আপিলেও বহাল
ইবি: প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের সিন্ডিকেটের দেয়া সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখেছে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিয়ার নেতৃত্বে আপিল বিভাগ বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেয়। এর ফলে পরীক্ষার মাধ্যমে দুটি বিভাগে ভর্তি হওয়া ১০০ শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে কোনো বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
ব্যারিষ্টার রুহুল কুদ্দুস সাংবাদিকদের জানান, গত বছরের ৭ ডিসেম্বর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ ইউনিটের (গণিত ও পরিসংখ্যান) দুটি বিভাগে পরীক্ষা হয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৬ জানুয়ারি ১০০ শিক্ষার্থী বিভাগ দুটিতে ভর্তি হন। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠলে চলতি বছর ৬ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট বৈঠকে পরীক্ষা বাতিল করা হয়। পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে শিক্ষার্থীরা হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ১৩ মার্চ হাইকোর্ট সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে রুল জারি করে একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ। এর মধ্যে ১৬ মার্চ এফ ইউনিটের পরীক্ষা নতুন করে নেয় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে রুলের শুনানি শেষে গত ১৭ এপ্রিল হাইকোর্ট এফ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের সিন্ডিকেটের দেয়া সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপিল করেছিল।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের নানা আয়োজন
২২ নভেম্বর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। ১৯৭৯ সালের এই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়টি যাত্রা শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসকে উদ্যাপন করতে দুই দিন ব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন, আনন্দ শোভাযাত্র, আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
যানা যায়, সকাল ৮টা ৩০মিনিটে প্রশাসন ভবন চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী এবং বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন করবেন প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মোঃ শাহিনুর রহমান।
প্রভোস্টগণ সকাল ৯টায় স্ব-স্ব হলে জাতীয় পতাকা ও হল পতাকা উত্তোলন করবেন। পতাকা উত্তোলন শেষে সকাল ১০টায় প্রশাসন ভবন চত্ত্বরে শান্তি ও আনন্দের প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের হবে।
শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে গিয়ে সমবেত হবে। শোভাযাত্রা শেষে কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনাসভার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে।
rtnn