kader_01

আ.লীগে সমস্যা আছে: কাদের

নিজ দলের মধ্যে বিভেদ ও ঐক্য নিয়ে আবারও নেতা-কর্মীদের সতর্ক করলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলের ভেতর কিছু সমস্যা আছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, এই বিভেদ বহন করা আওয়ামী লীগের পক্ষে আর সম্ভব নয়। এসব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনায় ক্ষমতাসীন দলের নেতা এই কথা বলেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে ইউনেস্কো বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় এই আলোচনার আয়োজন করে জাতীয় প্রেসক্লাব।

আলোচনায় দীর্ঘ বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের দলের ভেতরকার অনৈক্য, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দাবির বিষয় নিয়েই বেশি কথা বলেন।

কাদের বলেন, ‘এ বছর আমরা অনৈক্য অ্যাফোর্ড করতে পারব না। আওয়ামী লীগের জন্য সমর্থনের কোন কমতি নেই। কিন্তু দলের ভেতর কিছু সমস্যা আছে। সেগুলোকে সমাধান করার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিভিন্ন এলাকায় দলীয় কোন্দলে সংঘর্ষ ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সরকার বা জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনেও দলের একাংশের বিদ্রোহের প্রভাব পড়েছে। আওয়ামী লীগের শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে, এমন এলাকাতেও একাধিক প্রার্থীর কারণে দলীয় প্রার্থী হেরে গেছেন। সবশেষে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও বহু চেষ্টা করেও স্থানীয় পর্যায়ে নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করতে পারেনি আওয়ামী লীগ।

এই অবস্থায় আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে স্থানীয় পর্যায়ে কোন্দল দূর করতে চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। তাদের সামনে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও একই চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বর্তমান মেয়র শরফুদ্দিন আহমেদ ঝণ্টুকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিলেও দলের একাংশ তার বিরোধিতা করছে।

নেতাকর্মীদের সতর্ক করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো ব্যক্তির বিরোধিতা করতে গিয়ে দলের ক্ষতি করা যাবে না। বিরোধীপক্ষ এর সুযোগ নেবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ থাকলে আওয়ামী লীগের বিজয় হবে।’

জাতীয় নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিএনপির অবস্থান একেক সময় একেক ধরনের মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের নিয়ে যে ধরনের ব্ল্যাকমেইলিং বক্তব্য দেয় বিএনপিও একই ধরনের বক্তব্য দেয়। তারা একেক বার একেক রকম বক্তব্য দেয়।’

‘একসময় তারা ছিল তত্ত্বাবধায়ক আবার বলে সহায়ক সরকার। তারা কার কাছে এই দাবি জানায়? তারা ইসিকে বলে সহায়ক সরকারের কথা। ইসি এখানে কি করবে? পরে আবার বলে ইসি নাকি সরকারকে বুঝাবে। যেনতেন প্রকারে তাদের ক্ষমতায় বসাতে হবে। তা না হলে তারা শান্তি পাবে না।’

বিএনপির কি ঠেকা পড়েছে যে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে?-বলে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর এমন বক্তব্যেরও জবাব দেন কাদের। বলেন, ‘বিএনপি জানে শেখ হাসিনা বা সরকারের অধীনে নয়, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। তারপরও তারা ব্ল্যাকমেইলিং বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে, জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এখানে তারা ইচ্ছা করেই ভনিতা করছে।’

সংলাপে বসতে বিএনপির দাবি নাকচ করে কাদের বলেন, ‘যখন ওনার (খালেদা জিয়া) ছেলে মারা গেলেন প্রধানমন্ত্রী ছুটে গেছেন ওনাকে সান্ত্বনা দিতে। কিন্তু উনি দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন। উনি এখন সংলাপের কথা বলেন। সংলাপের দরজা তো ওই দিনই বন্ধ করে দিয়েছেন নিজের দরজা বন্ধ করে।’

বিএনপির নেতাদের মধ্যে সৌজন্যে নাই উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘আমরা এতো কিছুর পরও খালেদা জিয়াকে বেগম জিয়া বলি। আর ওনারা বলেন, হাসিনা, হাসিনা। এটা আমাদের কষ্ট লাগে। কারণ বর্তমানে আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি।’

সাংবাদিকদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো গঠনের কাজ অনেকদূর এগিয়েছে জানিয়ে সড়কমন্ত্রী বলেন, ‘আমার তথ্যমন্ত্রীর সাথে কথা হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আগামী সপ্তাহে নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ নেবেন। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) তথ্যমন্ত্রী মালিক ও স্টেক হোল্ডারদের সাথে বৈঠক করবেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, দৈনিক সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ার। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

ঢাকাটাইমস

সরকারের পছন্দ সৈয়দ মাহমুদ হোসেনই পরের প্রধান বিচারপতি !

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে পছন্দ সরকারের। তবে এর সিদ্ধান্ত নেবেন রাষ্ট্রপতি। তবে, বিচার বিভাগে স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে শিগগিরই এমন সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানা গেছে।

ছুটি নিয়ে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসারত অবস্থায়ই সুরেন্দ্র কুমার সিনহা প্রধান বিচারপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন। গত শুক্রবার পদত্যাগপত্র পৌঁছে বঙ্গভবনে, যা শনিবার জানা যায়। পদত্যাগ পত্র পৌছার তিনদিন পর গতকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন বলে জানায় বঙ্গভবন। একই সঙ্গে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সেটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

অবশ্য গত শুক্রবার বিচারপতি সিনহার পদত্যাগ পত্র পাঠানোর খবর গণমাধ্যমে আসার পর থেকেই পরবর্তী প্রধান বিচারপতি কে হতে পারেন, এ নিয়ে জল্পনা কল্পনা শুরু হয়ে যায়। প্রধান বিচারপতি পদের জন্য মূলত দুজনের কথা ভাবা হয়, আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্‌হাব মিঞা। এবং জ্যেষ্ঠতার ক্রমে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা গত ৩ অক্টোবর থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ওই সময় থেকে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দীর্ঘ এক মাসের ছুটিতে যান। আবদুল ওয়াহহাব মিঞার রাজনৈতিক দর্শনের কারণে তাঁকে প্রধান বিচারপতি করতে আপত্তি করেছে সরকারের একটি অংশ। দক্ষিণপন্থী হিসেবে পরিচিত বিচারপতি ওয়াহ্হাব মিঞা এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামাত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁকে প্রধান বিচারপতি করা হলে সুপ্রিম কোর্টে স্থিথিশীলতা আসবে কিনা এ নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্নের অবকাশ আছে।

অপর দিকে জ্যেষ্ঠতার ক্রমে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন সম্পর্কে কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শের সংশ্লিষ্টতার কথা কখনো ওঠেনি। এর আগে তিনি দুবার নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের বাছাই কমিটির প্রধান ছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন। সবার কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি সরকারেরও আজানা নয়। তাই ২২ তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে তাঁকেই প্রথম পছন্দ হিসেবে রেখেছে সরকার।

তবে সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা হলে তা হবে জ্যেষ্ঠতার লঙ্ঘন। তবে এবারই প্রথম এমন লঙ্ঘন ঘটছে না। এ পর্যন্ত দেশে ২১ বার প্রধান বিচারপতি নিয়োগে ছয়বারই জ্যেষ্ঠতার লঙ্ঘন ঘটেছে।

এ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, ‘বিচারপতি নিয়োগে সিনিয়রটির ব্যাতয় এর আগেও ঘটেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়টি পুরোপুরিই রাষ্ট্রপতির হাতে। তিনি চাইলে এই বিষয়ে সরকারের কারও সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন।’

এছাড়া জ্যেষ্ঠতার ক্রম অনুযায়ী মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞাকে প্রধান বিচারপতি করা হলেও আগামী বছরই এই সময়ে প্রধান বিচারপতি হবেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। কারণ ওয়াহ্হাব মিঞার মেয়াদ শেষ হবে ২০১৮ সালের ১০ নভেম্বর। অপরদিকে মাহমুদ হোসেনের মেয়দ শেষ হবে ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর। তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই বিচার বিভাগে স্থিথিশীলতার লক্ষ্যে সরকার এখনই উদ্যোগ নিতে চাইছে।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin