tarana_halim

আ.লীগকে হটানোর শক্তি বিএনপি-জামাতের নেই: তারানা হালিম

আওয়ামী লীগকে পরাজিত করে এমন শক্তি বিএনপি-জামায়াতের নেই বলে মন্তব্য করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে পরাজিত করে এমন শক্তি বিএনপি-জামায়াতের নেই। এজন্য আমাদেরকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

শনিবার নাগরপুর সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এসব কথা বলেন।

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মির্জা আনোয়ার হোসেন বাবুল। প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাওছার।

তিনি আরো বলেন, যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি, তাহলে আগামীতে অবশ্যই নৌকা মার্কা জিতবে। আমি বিশ্বাস করি নৌকা মার্কা জিতলে জেতে শেখ হাসিনা, আর শেখ হাসিনা জিতলেই আমি জিতি। তাই আগামী নির্বাচনের আগেই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল অপশক্তিকে রুখতে হবে। অপশক্তিকে রুখতে পারলেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়া সম্ভব।

উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক বাবর আল মামুনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য দেন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মতিউর রহমান মতি, কাজি শহিদুল্লাহ লিটন, আব্দুল আলিম বেপারি, ডা. আব্দুস সালাম প্রামানিক, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর মেয়র মো. জামিলুর রহমান মিরন, তারেক শামস খান হিমু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাতিনুজ্জামান খান সুখন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. কুদরত আলী প্রমুখ।

তারানা হালিম কি পদত্যাগ করছেন?
ঢাকা: শেষ পর্যন্ত কি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম? দুই সপ্তাহ ধরে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে এই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প, বিটিসিএলের এমডি নিয়োগ এবং আন্তর্জাতিক কলের রেট নির্ধারণ নিয়ে টেলিযোগাযোগ খাতের প্রভাবশালী একাধিক পক্ষের সঙ্গে মতবিরোধ চরম পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ার কারণেই তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিতে পারেন।

সোমবার দৈনিক সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত এক বছরে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বেশ কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তাকে। বিশেষ করে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিমকার্ড নিবন্ধনের ফলে ভিওআইপি প্রযুক্তি ব্যবহার করে অবৈধ আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদান প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

এ কারণে অবৈধ আন্তর্জাতিক কল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন। দেশের স্বার্থ রক্ষা করে আন্তর্জাতিক কল রেট নির্ধারণকে গুরুত্ব দেওয়াটাও অনেকের পছন্দ হয়নি। এই মহলটিই এ ধরনের গুঞ্জন ছড়াতে পারে। তবে গুঞ্জন গুঞ্জনই। সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী। তার প্রতি আমার পুরোপুরি আস্থা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব দিয়েছেন। সততার সঙ্গে আমি তা পালন করছি। সমঝোতা করে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করিনি, করবও না। প্রয়োজনে দায়িত্ব ছাড়তেও দ্বিধা করব না।

কেন এই গুঞ্জন
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের মন্ত্রিত্ব ছাড়ার গুঞ্জন প্রবল হয়েছে সর্বশেষ বিটিসিএলের এমডি নিয়োগের পর থেকে। এ নিয়োগের বিরুদ্ধে ছিলেন প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। গত ১৬ নভেম্বর বিটিসিএলের এমডি হিসেবে দু’বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান মাহফুজ উদ্দিন আহমেদ। প্রায় এক বছর আগে তিনি বিটিসিএলের ভারপ্রাপ্ত এমডি হিসেবে অবসরে গিয়েছিলেন। তার সময়ে বিটিসিএলের নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণের আলোচিত টিএনডিপি প্রকল্প থেকে অনিয়মের অভিযোগ তুলে প্রায় তিনশ’ কোটি টাকার ঋণ সহায়তা প্রত্যাহার করেছিল জাপানের আন্তর্জাতিক সংস্থা জাইকা।

এ নিয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এবং সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় টেলিযোগাযোগ খাতে। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটিতে জাইকার ঋণ ফেরত যাওয়ার নেপথ্যে এমডি মাহফুজ উদ্দিন আহমেদ এবং প্রকল্প পরিচালক অশোক কুমার মণ্ডলের অনিয়ম এবং দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হয়।

পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। গত এক বছরেও এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিবের নেতৃত্বাধীন বিটিসিএলের পরিচালনা পর্ষদ।

সূত্র জানায়, হঠাৎ করেই গত দু’মাস আগে অবসরে যাওয়া মাহফুজ উদ্দিন আহমেদকে চুক্তিভিত্তিক এমডি নিয়োগে তৎপর হয়ে ওঠে আন্তর্জাতিক কল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত একটি প্রভাবশালী মহল।

প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার শুরুতেই বিতর্কিত একজন ব্যক্তিকে এমডি নিয়োগে আপত্তি জানান। এতদসত্ত্বে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান মাহফুজ উদ্দিন আহমেদ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মাহফুজ উদ্দিন আহমেদ অবসরে যাওয়ার পর তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগে কর্মরত বিটিসিএলের সাবেক কর্মকর্তা গোলাম ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরীকে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের পছন্দে বিটিসিএলের এমডি নিয়োগ করা হয়। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর বিটিসিএলের আন্তর্জাতিক কলের পরিমাণ বাড়তে থাকে। বিটিসিএলের ভেঙে পড়া আর্থিক কাঠামোও চাঙ্গা হয়। এহেন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বেসরকারি আইজিডবি্লউ অপারেটরদের সুইচে কলের পরিমাণ কমে গেলে তারা ক্ষুব্ধ হয়। গত মে মাসে গোলাম ফখরুদ্দিন আহমেদকে আকস্মিকভাবে এমডি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

আরো কিছু কারণ
সূত্র আরো জানায়, শুধু বিটিসিএলের এমডি নিয়োগ নয়, আরো কিছু ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক কল ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করা প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের মতবিরোধ বেড়ে যায়। প্রতিমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার আগেই এই প্রভাবশালী মহল নিজেদের ফোরাম গঠন করে। তারা ফোরামের সুইচের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।

সে সময় প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের সাত সদস্যের ফোরাম বিটিআরসির সঙ্গে বিদেশ থেকে আসা কল টার্মিনেশন রেট এক দশমিক পাঁচ সেন্ট হিসেবে রাজস্ব ভাগাভাগির চুক্তি করলেও পরে চুক্তির দুর্বলতার সুযোগে কল রেট বাড়িয়ে দুই সেন্টের উপরে নেয়। এর ফলে অবৈধ পথে আবারো আন্তর্জাতিক কল আসার হার বাড়তে থাকে। কমতে থাকে সরকারের আয়।

দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম কল টার্মিনেশন রেট ১ দশমিক ৫ সেন্ট থেকে ১ দশমিক ৭ সেন্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে বিটিআরসির সঙ্গে আগের চুক্তি সংশোধনের উদ্যোগ নেন। এর মধ্য দিয়েই আন্তর্জাতিক কল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের মতবিরোধের শুরু। প্রভাবশালী মহলের পছন্দমত রেট নির্ধারণ না হওয়ার কারণে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক কল রেট নির্ধারণের বিষয়টি ঝুলে আছে।

সূত্র আরো জানায়, একই সঙ্গে বিটিসিএলের এমওটিএন প্রকল্পে অস্বাভাবিক ব্যয় নির্ধারণের ব্যাপারে আপত্তি তুলে, ঢাকা-কুয়াকাটা ট্রান্সমিশন লিংক স্থাপনে বৈধ টেন্ডার বাতিল করা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এবং মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসিসহ রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম কোম্পানির কর্মকর্তাদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ যাত্রা নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েও অনেকের বিরাগভাজন হন তারানা হালিম।

সূত্র: আরটিএনএন

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin