khaleda_zia_adalat

আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ : খালেদা

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করেছেন আলোচিত এই মামলার প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসরন বেগম খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থন ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের অসমাপ্ত বক্তব্য দেয়ার জন্য দিন ধার্য ছিল।

সে অনুযায়ী বেলা ১১টা ২০ মিনিটে আদালতে পৌঁছান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ১১টা ৩০ মিনিটে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের অসমাপ্ত বক্তব্য দেয়া শুরু করেন। এ বক্তব্যে তিনি বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদ সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।

‘মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা নূর আহমেদ আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ না পেয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেননি। কিন্তু মামলার দ্বিতীয় তদন্ত কর্মকর্তা হারুন-অর-রশিদ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।’

পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারক তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ পড়ে শোনান। এরপর বিচারক খালেদার কাছে জানতে চান- আপনি দোষী না নির্দোষ?

জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ।

এরপর বিচারক খালেদার কাছে জানতে চান- আপনি কি সাফাই-সাক্ষী দেবেন? খালেদা জবাব দেন- আমি সাফাই সাক্ষী দেব। এরপর বিচারক জানতে চান- এ মামলাতেও অরফানেজ মামলার মতো খালেদা ধারাবাহিক বক্তব্য দেবেন কি না? খালেদা উত্তরে বলেন, আমি ধারাবাহিক বক্তব্য দেব।

কোনো কাগজ-পত্র দেবেন কি না- আদালতের এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, প্রয়োজনে দেব। এদিন এ দুই মামলাতেই খালেদার পক্ষে স্থায়ী জামিনের আবেদন করা হলেও তা নাকচ করে দিয়ে বিচারক বলেন, খালেদা যেভাবে আছেন, সেভাবেই থাকবেন। এরপর দুই মামলাতেই খালেদার বক্তব্যের জন্য ৩০ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

জাগো নিউজ

দল সামলাতেই হিমশিম বেগম জিয়া

আন্দোলন বা নির্বাচন নয়, দল সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছেন বেগম জিয়া। দফায় দফায় বৈঠক করছেন, হুমকি দিচ্ছেন, দলের ঐক্যের গান গাইছেন, তবুও নিশ্চিত হতে পারছেন না। বিএনপির একটি বড় অংশ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এরা আর বেগম জিয়ার সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করতে পারছেন না। বেগম জিয়ার সিদ্ধান্ত নির্বাচনের বিপক্ষে গেলে বিএনপির ভাঙ্গন এখন অবধারিত। শুধু দেখার বিষয় ভাঙ্গন কত বড় হয়। বিএনপির সিংহভাগ নেতাই একমত, ২০১৪ সালের ভুল এবার করা ঠিক হবে না।

বিএনপির অনেক নেতাই প্রকাশ্য-গোপনে বৈঠক করছেন। প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিএনপির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছেন, একমাত্র যাঁদের কোনো নির্বাচনী আসন নেই, তাঁরাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার আওয়াজ তুলছে। বাকিরা সব নির্বাচনের মাঠে নেমে গেছেন।’ বেগম জিয়াও দেশে ফিরে বুঝতে পারছেন, সব সামলানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য তিনি প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর তিনি ভাইস চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন।

সবাইকে নরমে গরমে বোঝাতে চেয়েছেন। আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। বলেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন ছাড়া নির্বাচনে কেন যাওয়া যাবে না। সম্প্রতি উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে বেগম জিয়াকে একজন উপদেষ্টা বরেছেন, ‘ম্যাডাম আপনার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফর্মুলা বের করেন, একবার নির্বাচনের মাঠে নেমে গেলে বাঁশি ফুকানোর লোকও পাওয়া যাবে না।’

বিএনপির মধ্যে এই মত তীব্র হচ্ছে যে, ক্ষমতায় না যেতে পারি, সম্মানজনক সুস্থ রাজনীতির জন্য নির্বাচনের বিকল্প নেই। নির্বাচনে বিরোধী দল হলেও মামলা, হামলা বন্ধ হবে, ফিরারি জীবনের অবসান হবে- এই মত অনেকের।

একজন বিএনপি নেতা তো বলেই ফেললেন, ‘কর্মীরা নির্বাচনের জন্য পাগল, তাঁরা জানে মাঠের অবস্থা কী। তাই তাদের এবার নির্বাচন থেকে দূরে রাখা অসম্ভব।’ তবে, বেগম জিয়ার ঘনিষ্ঠরা বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসল ইস্যু না, বেগম জিয়া চান নির্বাচনের আগে যেন দন্ডিত না করা হয়। নির্বাচনের যোগ্য থাকলে শেখ হাসিনার অধীনেই বেগম জিয়া নির্বাচন করবেন-এমন অভিমত অনেকের।

বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের বেগম জিয়া এই বার্তাই দিয়েছেন যে, তাঁর বিরুদ্ধে মামলাসহ দলের বড় বড় নেতাদের মামলাগুলোকে নির্বাচন পর্যন্ত পেছালে তিনি নির্বাচনের বিষয়ে ভাববেন। কিন্তু সরকার স্পষ্ট করেই বলছে, আইন তাঁর নিজস্ব গতিতে চলবে। মামলায় বেগম জিয়ার দণ্ড হবে কিনা সে সিদ্ধান্ত নেবে আদালত, সরকার নয়। অখন্ড বিএনপির নির্বাচনে যাবার সিদ্ধান্তের প্রধান বাধাই হলো ‘মামলা’। বিএনপি এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট আশ্বাস চায়। কিন্তু কর্মীরা চায় নির্বাচন, তা খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে হোক বা তাঁর অযোগ্যতায় অন্য কারও নেতৃত্বে।

বাংলা ইনসাইডার

বি. চৌধুরীর বৈঠকে অংশ না নিলে জোট থেকে বাদের সিদ্ধান্ত

গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ও সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ৫ দলীয় জোট ঘোষণা অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ডাকা তার বাসায় বৈঠকে গণফোরাম নেতৃবৃন্দ ও কাদের সিদ্দিকী না গেলে পরদিন শুক্রবার অনুষ্ঠেয় পরবর্তী বৈঠকে তার জন্য অপেক্ষা করা হবে।

ওইদিন তিনি বা তার দল বৈঠকে যোগ না দিলে প্রাথমিকভাবে তিন দল নিয়েই জোট ঘোষণার সিদ্ধান্ত হবে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়।গণফোরাম বৈঠকে যাবে না একথা আগেই বি চৌধুরীকে জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কাদের সিদ্দিকীর যোগদান না করার ঘটনাটি ছিল অনেকটাই অপ্রত্যাশিত। তাই বৃহস্পতিবার অথবা পরদিন শুক্রবার অনুষ্ঠেয় পরবর্তী বৈঠকে কাদের সিদ্দিকীর জন্য অপেক্ষা করা হবে।

ওইদিন তিনি বা তার দল বৈঠকে যোগ না দিলে প্রাথমিকভাবে তিন দল নিয়েই জোট ঘোষণার সিদ্ধান্ত হবে।সূত্রমতে, গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন এখনই জোট গঠন করার ব্যাপারে জোর না দিয়ে জোটের শরিকদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার বিষয়ে বেশী গুরুত্ব দিয়েছেন।

তবে অন্য দলগুলো এই আশ্বাসে বিশ্বাস করতে রাজি নয়। ইতোমধ্যে বি চৌধুরীর বাসায় জোট গঠনে আগ্রহী দলগুলোর বৈঠকেও গণফোরামের কোনো নেতৃবৃন্দ যায়নি। এছাড়া বৈঠকে যাননি কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীও।সূত্র আরও জানায়, এই পাঁচদলীয় জোটের মূল কাজ হলো কর্মসূচি ভিত্তিক আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা, নির্বাচনের পরে কিছু সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করা, রাষ্ট্রের মূলনীতি-দুর্নীতি দমন, সন্ত্রাস দমন ও রাষ্ট্রের বিবেন্দ্রীকরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচিভিত্তিক প্রস্তাবনা ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ হওয়া

সম্প্রতি গণফোরামের সভাপতি কামাল হোসেনের মতিঝিল চেম্বারে তাকে কবে জোটের ঘোষণা দিচ্ছেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এই মূহুর্তে বিভিন্ন দলের সঙ্গে ঐক্যের ব্যাপারে জোর দিচ্ছি, জোট নিয়ে নয়। জোট আরো পরে করা হবে। জনগণের মধ্যে ঐক্য দরকার, এ ঐক্য প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে শক্তির উৎস সৃষ্টি হবে। জনগণ, মানবতা, আইনের শাসন, সুশাসন, দুর্নীতিমুক্ত শাসন ও জনগণকে সু-সংগঠিত করে সব মিলে শক্তি সঞ্চয় করার চেষ্টা করছি। এখন সভা-সমাবেশ করতে গেলে পুলিশ বাঁধা দেয়। আমরা ভাল নির্বাচন চাই, নির্বাচনকে ধ্বংস করে মানুষকে দাস বানানো যাবে না।

বিকল্পধারা বাংলাদেশ’র প্রেসিডেন্ট ও সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, আমরা রাজনৈতিক জোট গঠনের ব্যাপারের সমমনা পাঁচটি দল একাধিকবার বৈঠকে মিলিত হয়েছি। তবে, জোট করার ব্যাপারে সবদল ঐক্যমতে পৌঁছেছি। পুনরায় বৈঠক করে আমরা এক সপ্তাহের মধ্যে জোট ঘোষণা করব।কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিককে আপনি সম্প্রতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাসায় তার ডাকা বৈঠকে জাননি কেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি কোনো শত্রুকে অপমান করা পছন্দ করি না।

তবে, আমি শরীয়তপুর ছিলাম-যার ফলে অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাসায় বৈঠকে যেতে পারিনি। আমি ঢাকার বাইরে থাকার বিষয়টি তাকে বৈঠকের আগেই জানিয়ে দিয়েছি।বাংলাদেশের কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিক বলেন, জোট করার ব্যাপারে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমরা সবাই একত্রিত হয়ে জোটবদ্ধ হব। তবে, অচিরেই জোটবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা চলছে।

বহু বছর একসঙ্গে চলে এবারও জোট গঠন করতে পারলেন না বিকল্প ধারার সভাপতি সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (বি চৌধুরী) ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। উদারপন্থী বলে পরিচিত এ দুই নেতা বিকল্প একটি জোট গঠনের জন্য গত পাঁচ বছরে অন্তত ১০টি বৈঠক করেছেন।

সর্বশেষ গত শনিবার দলীয় বৈঠকে গণফোরাম ‘একলা চলার’ সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ওই উদ্যোগ পুরোপুরি ভেস্তে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে।সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, তাদের (গণফোরাম) হয়তো কোনো অসুবিধা আছে, এ জন্য আসবে না।নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বিকল্প জোট গঠনের প্রস্তুতি অনেক দিন ধরেই চলছে। এখন গণফোরাম যদি না থাকে সে ক্ষেত্রেও বসে থাকা যাবে না। বিকল্প রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে জনগণের কাছে যেতে হবে।

আমাদের সময়

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin