khaleda_zia_adalat

আপিল করেছেন খালেদা জিয়া, আপিল শুনানি বৃহস্পতিবার

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে করা আপিলের শুনানির জন্য আগামী বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল (সোমবার) বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের অনুলিপি পেয়ে মঙ্গলবার আপিল করেন আইনজীবীরা।

আপিল শুনানি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

আপিলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম।

আপিল আবেদনের শুনানির দিন ধার্য হওয়ার পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আজ আদালতে আপিল করেছি। আদালত শুনানির জন্য আগামী বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছেন। ওইদিনই আমরা জামিন আবেদনও করবো। আশা করছি সেদিন জামিন শুনানিও অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে খালেদা জিয়ার সাজা বাড়ানোর জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আলাপ-আলোচনার পর আপিলের সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম।

তিনি বলেন, এ সিদ্ধান্ত নেবে দুদক। আজ আপিল শুনানির জন্য আমরা মেনশন করেছিলাম। পরে আপিল শুনানির জন্য আগামী বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছেন আদালত। আমরা রায়ের কপি সোমবার রাত ৯ টায় পেয়েছি। এটা পড়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।

গতকাল (সোমবার) বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের অনুলিপি পেয়ে মঙ্গলবার আপিল করেন আইনজীবীরা।

মঙ্গলবার দুপুরে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। ৬০ পৃষ্ঠার মূল আবেদনের সঙ্গে ১২২৩ পৃষ্ঠার নথিপত্র জমা দেয়া হয়েছে।

এর আগে আবেদনের কপি নিয়ে খালেদার আইনজীবী আব্দুর রেজাক খানসহ অন্যরা হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় যান। রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে মোট ২৫টি যুক্তি দেখানো হয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো- যে অভিযোগে খালেদা জিয়াকে দণ্ড দেয়া হয়েছে সেটা দুর্নীতির মধ্যে পড়ে না।

যে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খালেদার সাজা হয়েছে ওই টাকা এখনও ব্যাংকে রয়েছে বলেও যুক্তি দেখানো হয়েছে। বিশেষ আদালতের দেয়া সাজার বিরুদ্ধে আপিলে খালেদা জিয়ার খালাসও চেয়েছেন তার আইনজীবরা।

দুর্নীতি দমক কমিশনের (দুদক) দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি বেগম জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছে বিএনপি।

মামলায় রায় হওয়ার পরই বেগম জিয়াকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। এরপর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পান খালেদার ছেলে তারেক রহমান। অবশ্য ওই মামলায় তারেককেও ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আপিল করেছেন। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে আইনজীবীদের মাধ্যমে তিনি আপিল করেন।

গতকাল সোমবার বিকেলে বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক আখতারুজ্জামানের কার্যালয় থেকে মামলার রায়ের সার্টিফায়েড কপি বা অনুলিপি নেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিঞা।

মঙ্গলবার বিকেল তিনটায় হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিলটি জমা দেন খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী কায়সার কামাল।

আপিল দায়েরকারী আইনজীবী হিসেবে নাম রয়েছে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুর রেজাক খানের। রেজাক খান বলেন, খালেদা জিয়ার সাজার বিরুদ্ধে আপিল প্রস্তুত করে তা হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানো হয়েছে।

৮ ফেব্রুয়ারি বিশেষ জজ আদালত-৫ এই মামলার রায় দেন। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির জন্য পাঁচ বছরের সাজা ও জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছরের জেল ও জরিমানা করা হয়।

রায়ের দিন আদালত ৬৩২ পৃষ্ঠার রায়ের সার সংক্ষেপ পড়েন। রায়ের অনুলিপি এক হাজার ১৭৪ পৃষ্ঠার। রায়ের পর থেকে নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারে রয়েছেন খালেদা জিয়া।

এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় নিম্ন আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন তার আইনজীবীরা। এব্যাপারে হাইকোর্টে বৈঠকে করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

মঙ্গলবার সকাল নয়টায় খালেদা জিয়ার সিনিয়র আইনজীবীরা এই বৈঠকটি হয়। বৈঠকে এ জে মোহাম্মদ আলী ছাড়া অন্যরা হলেন- সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, দুদক আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট আবদুর রেজাক খান, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, সমিতির সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সানাউল্লা মিয়া, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে সিনিয়র আইনজীবীদের বৈঠকের এক পর্যায়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রায়ে উল্লিখিত পর্যবেক্ষণের অধিকাংশ অসত্য।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী আরো বলেন,‘আমরা পুরো রায়টি পড়ে দেখেছি। এখন আপিলের প্রস্তুতির গ্রাউন্ড তৈরি করা হচ্ছে। আশা করছি, আজকের মধ্যেই আপিল দায়ে করতে পারব।’

জয়নুল আবেদীন আরো বলেন,‘পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি পাওয়ায় আমরা গতকাল রাতে বৈঠক করেছি। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সকালে বৈঠক করেছি। দুপুর সাড়ে ১২টায় পুনরায় বৈঠকে মিলিত হবো। এরপর আপিল দায়ের বিষয়টি আপনাদের জানিয়ে দেবো।’

 

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin