আন্দোলনে পথ খুঁজছে বিএনপি

দীর্ঘদিন পর নড়ে-চড়ে বসেছে এক যুগের বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। ২০১৫ সালে অনির্দিষ্ট কালের অবরোধ ডেকে নিজেরাই ‘বোকা’ হয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশের জনগন কর্তৃক প্রত্যাখাত হওয়া আন্দোলনের উদাহরণ সম্ভবত এটি।

এরপর বিএনপিকে আর আন্দোলনের মাঠে দেখা যায়নি। অনেকে মনে করেছিল বেগম জিয়ার গ্রেপ্তার হবার পর বড় ধরনের আন্দোলনে যাবে বিএনপি। কিন্তু রাজপথের আন্দোলনে ক্ষমতার গর্ভে নেয়া দলটি যে অভ্যস্ত নয়, তা প্রমাণ করেছে।

শেষ পর্যন্ত আপোষহীন খালেদা জিয়াকে মুচলেকা দিয়েই জামিন নিতে হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর অনুকম্পায়। বিএনপিতে কান পাতলেই শোনা যায়, হতাশ হয়ে পরস্পরকে সমালোচনা করা শব্দ গুচ্ছ। কেন ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে অংশ নিলো বিএনপি?

সংসদে গেল কেন? এখন এসব উপ-নির্বাচনে যাওয়ার প্রয়োজন কি? এসব নানা প্রশ্নে বিভক্ত বিএনপির নেতৃত্ব। দলের নেতৃত্বে তারেক-খালেদার গৃহ বিবাদের বিষয় নিয়েও বিএনপিতে মুখরোচক আলোচনা আছে।

লন্ডন থেকে তারেক জিয়া কেবল মনোনয়ন বাণিজ্যের সময় সরব হন। ৬ মাসের বেশি সময় জামিনে মুক্ত বেগম জিয়া। কিন্তু রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তিনি উদাসীন। বিএনপির নেতারাই বলেন, বেগম জিয়ার কাছে রাজনৈতিক বিষয় তোলাই বারণ।

এ রকম ক্ষত-বিক্ষত হতচ্ছারা অবস্থায় থাকা দলটি এখন আন্দোলনের কথা ভাবছে। বিএনপির নেতারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন। আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বর নাগাদ রাজপথে কর্মসূচী দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।

বিএনপির একজন নেতা বলছেন, ‘নানা ইস্যুতে মানুষ সরকারের উপর আস্থা হারাচ্ছে। তাই এখন আন্দোলন করলে জনসমর্থন পাওয়া যাবে।’ আন্দোলনের প্রস্তুতি হিসেবে ইতোমধ্যে, বিভিন্ন স্থানে চলমান ইস্যু নিয়ে টুকটাক শো-ডাউনের চেষ্টা করছে দলটি। দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি, দুর্নীতি এবং ধর্ষণের উদ্বেগজনক বৃদ্ধি নিয়ে বিএনপিকে সরব দেখা যাচ্ছে।

হঠাৎ বিএনপি নেতাদের মুখে খই ফুটেছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন, ‘কর্মীরা আন্দোলন চায়। কর্মীরা নির্বাচনে কাজ করতে চায় না। ক্রমশ তারা হতাশ হচ্ছে। তাই কর্মীদের চাপেই বিএনপি আন্দোলনের কথা ভাবছে।’

বিএনপির ঐ নেতা বলছেন, ‘সরকার এখন নানা মূখী চাপে আছে। তাই আন্দোলনের এটাই সময়।’ কিন্তু বিএনপির নেতাদের আন্দোলন করার সক্ষমতা আছে কিনা সেই প্রশ্ন রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় হয়ে উঠছে। বেগম জিয়া কোন শর্তে কিভাবে মুক্ত আছেন, জানে না বিএনপির কেউ।

বিএনপির নেতাদেরও অনেকেই প্রকাশ্য এবং গোপনে সরকারের সঙ্গে সমঝোতার মধ্যে আছেন। এই পরিস্থিতিতে এই আন্দোলনের ঘোষণা কি কর্মীদের স্বান্তনা দেয়ার জন্য? এই প্রশ্ন করছেন অনেকে। কারণ বিএনপির বেশীর ভাগ কর্মীই মনে করেন, বিএনপি  বর্তমান নেতৃত্ব আন্দোলনে অক্ষম ও অযোগ্য।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin