প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের স্মরণে আলোচনা সভা করেছে নোয়াখালী সমিতি। শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলের আইডিইবি ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আনিসুল হকের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তার বক্তব্যে দুই দুইবার উল্লেখ করেছেন, ‘অনেক কথা আছে, বলা সম্ভব না। সব কিছু বলব না।’
কী সেই কথা যেগুলো বলা সম্ভব না, বা যা বলবেন না আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের?
স্মরণ সভায় তিনি বলেন, ‘অসাধারণ প্রতিভা আমি তার (আনিসুল হক) মধ্যে দেখেছি। তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক বহুদিনের। যখন তিনি মিডিয়া পার্সনালিটি, তখন থেকেই তাকে চিনতাম। তার বাবা শরিফুল হক ছিলেন ঢাকায় আমার অভিভাবক, এলাকায়ও।
আমার প্রত্যেকটি নির্বাচনে তিনি আমাকে সহযোগিতা করেছেন। আজকে তিনি জীবন মৃত্যুর মাঝখানে। আনিস ভাইয়ের ছোট ভাই সেনাপ্রধান, তার বাসায় আছেন শরিফুল হক। তিন দিন আগে আমি তার সঙ্গে দেখা করতে গেছি, নাভিদও ছিল। অনেক কথা আছে, বলতে পারব না।’
আনিসুল হকের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিও হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনই আমার সঙ্গে শেয়ার করতেন বিভিন্ন বিষয়ে। দু-একটা বিষয়ে কিছুটা ভুলবুঝাবুঝিও হয়েছিল। সেটা হলো- মন্ত্রণালয় এবং সিটি করপোরেশনের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে। কিন্তু আমাদের কথা কখনো বন্ধ হয়নি, আমাদের অন্তরের উষ্ণতা এতটুকু কমেনি। ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও ঘনিষ্ঠতা আমাদের ছিল।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই মুহূর্তে তার স্থান পূরণের জন্য তার মত লোকের প্রয়োজন। কিন্তু আমি তার মত যোগ্য লোক দেখছি না। অনেক যোগ্য লোক আছেন, এর মধ্যেই আমাদের পছন্দ করে নিতে হবে। কিন্তু আনিস ভাই ওয়ান পিস। এত বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী মানুষ আমি জীবনে কম দেখেছি। সব কিছু বলব না। তার মৃত্যু আমাকে ব্যক্তিগভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আমার সকল সংকটে তিনি আমার পাশে ছিলেন।’
রাজনীতিতে সৌজন্যবোধ বিরল প্রাণীর মত হারিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ মাহমুদুর রহমান মান্নাকে দেখতে গেছি, ফেসবুকে কত কথা লিখেছে। আনিসুল হক যখন কোমায় তখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম; ফেসবুক-টুইটারে যে বিষয়গুলো এসেছে, এগুলো এক কথায় নোংরা। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর তার চরিত্রও হনন হয়েছে। এটা যারা করে তাদের অভ্যাসই এটা। মানুষকে চরিত্র হননের ছোরা দিয়ে তাকে আরেকবার হত্যা করা যায় না। সৎ মানুষকে চরিত্র হনন করে ধ্বংস করা যাবে না।’
নোয়াখালী সমিতির সভাপতি শাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম রব, নোয়াখালীর মুজিব বাহিনী প্রধান মাহবুবুর রহমান বেলায়েত, বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম, প্রয়াত মেয়র আনিসুলের হকের ছেলে নাভিদুল হক, ব্যবসায়ী হাবিবুল্লাহ ডনসহ নোয়াখালীর গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।