KHALEDA_ZIA

আদালতে তুলকালাম!

জিয়া অরফানেজ ও চ্যারিটিবল দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে বিশেষ আদালত।

বৃহস্পতিবার এই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়া সময়মত আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় বিচারক তার জামিন বাতিল করে এই আদশে দেন । সকালে রাজধানীর বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হরতালের কারণে তিনি সময়মত আদালতে যেতে পারেননি।

এসময় দুপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তুমুল বাক-বিতন্ডা হয়। এমন কি বিচারকের সঙ্গে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের তর্ক হয় বেশ কিছু সময় ধরে। এরপরও বিচারক খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করে আদেশ দেন।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেছেন, আমরা আদালতকে জানিয়েছিলাম বেগম জিয়া দুপুর ২টার পর হরতাল শেষ হলে আদালতে আসবেন। কিন্তু বিচারক তা শুনেননি। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

তিনি এই আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার ন্যায় বিচার প্রাপ্তি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। এর আগে সকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান জানিয়েছিলেন হরতালের কারণে বেগম জিয়া দুপুর ২টার পর আদালতে উপস্থিত হবেন। কিন্তু এর আগেই বিচারক বেগম জিয়ার জামিন বাতিলের আদেশ দেন।

প্রসঙ্গত, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার ডাকা হরতাল সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়। দুপুর ২টা পর্যন্ত ডাকা এ হরতালে সমর্থন দিয়েছে বিএনপি। একইসঙ্গে ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম গড়ে পাঁচ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দলটি।

এদিন বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের অসমাপ্ত বক্তব্য দেয়া এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য ছিল।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

এছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অপর একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১০ সালের ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া বাকি আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

উৎসঃ   rtnn

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin