আতশী কাঁচের নিচে তিন সিটি নির্বাচন

আগামীকাল রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটিতে একযোগে নির্বাচত অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় নির্বাচনে আগে এই তিন সিটি নির্বাচন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশের বিদেশি পর্যবেক্ষকরা। ইতিমধ্যে তাঁদের প্রতিনিধিরা তিন সিটিতে চলে গিয়েছে। এছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন এনজিও, প্রতিনিধিকে দায়িত্ব দিয়েছেন সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণের। তিন সিটির এই গভীর পর্যবেক্ষণ আতশী কাঁচ দিয়ে পর্যবেক্ষণের সঙ্গেই তুলনা করছেন অনেকেই।

সাধারণত দেখা যায়, বিদেশি পর্যবেক্ষকরা জাতীয় নির্বাচনে এমন গভীর পর্যবেক্ষণ করে থাকে। তবে স্থানীয় সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে এমন গভীর পর্যবেক্ষণ একটি নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে বিএনপি ও কিছু গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে ভোট কারচুপির অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনে কারচুপির কোনো দৃশ্যমান প্রমাণ কেউ উপস্থাপন করতে পারে নাই। মার্কিন দূতাবাসও মনে করছে যে, খুলনা ও গাজীপুরের ভোটে কারচুপি হয়েছে এবং তাঁরা এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিও প্রদান করেছে। মার্কিন দূতাবাস বিবৃতি প্রদান করার পর, সরকারের পক্ষ থেকে যখন ভোট কারচুপির সুস্পষ্ট প্রমাণ চাওয়া হয় তাঁদের কাছে। তখন মার্কিন দূতাবাস এই দুই সিটিতে ভোট কারচুপির কোনো প্রমাণ দিতে পারে নাই।

সেই কারণে আগামীকালের সিটি নির্বাচনে ভোট কারচুপির প্রমাণ খুঁজছে উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্রগুলো। তাদের মতে, তিন সিটি নির্বাচন সরকারের জন্য এসিড টেস্ট, এই তিন সিটি নির্বাচনে সরকার কতটুকু নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে পারে, সেটার উপর নির্ভর করছে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অনেক বিষয়।

মার্কিন দূতাবাস আগামীকালের সিটি নির্বাচনের জন্য মনিটরিং সেল বসিয়েছে। তিন সিটি করপোরেশনের মধ্যে দুটিতে তাঁদের নিজস্ব পর্যবেক্ষদেরকে পাঠিয়েছে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার জন্য। ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিটা সিটিতে আলাদাভাবে মনিটরিং করছে। যুক্তরাজ্য তিন সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায় প্রায়, পাঁচশর অধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি ও পর্যবেক্ষক তিন সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে।

জাতীয় নির্বাচনের আগে এই স্থানীয় নির্বাচনে এমন নজিরবিহীন হস্তক্ষেপ ও পর্যবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে যে, ‘বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলকে সহানুভূতি দেখানোর জন্য কি এমন করা হচ্ছে? নাকি বিশেষ কোন রাজনৈতিক দলকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানোর জন্য এমনটা করা হচ্ছে?’

আগামীকাল অনুষ্ঠিত তিন সিটি নির্বাচনে উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলো যদি ভোট কারচুপি বা অনিয়মের কোনো প্রমাণ না করতে পারে, তাহলে সবচেয়ে ইতিবাচক যে ঘটনা ঘটবে তা হলো, নির্বাচন কালীন সময়ে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের দাবির চির মৃত্যু ঘটবে। কারণ তখন এই দাবির আর কোনো ভিত্তি থাকবে না। পাশাপাশি সরকারও জাতীয় নির্বাচনের আগে এই তিন সিটি নির্বাচন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সুতারাং পর্যবেক্ষণের দিক থেকে এই তিন সিটি নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আবহ পেয়েছে।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin