alig_bnp

আওয়ামী লীগের জরীপ ! আ. লীগ ৩৯%, বিএনপি ৩৩%

এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আবারও জয়ী হবে। দেশের শতকরা ৩৯ ভাগ মানুষ এখনও আওয়ামী লীগকে পছন্দ করে। নির্বাচনে জয়ী হতে না পারলেও জনপ্রিয়তা বেড়েছে বিএনপির। এখন নির্বাচন হলে ৩৩ শতাংশ মানুষ বিএনপিকে ভোট দেবে। শতকরা ১১ ভাগ ভোটার কাকে ভোট দেবেন সে সম্পর্কে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেননি।

জাতীয় পার্টিতে ভোট দেবেন ৯ শতাংশ ভোটার। আর এত প্রতিকূলতার পরও ৪ শতাংশ ভোটার জামাতকে ভোট দেবে বলে জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ‘পাবলিক অপিনিয়ন পুল’ এর ‘বাংলাদেশ নির্বাচন ২০১৮’ শীর্ষক জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে।

গত ১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত এই জরিপে ৪ হাজার বৈধ ভোটারের মতামত নেওয়া হয়। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ২১০০ এবং নারী ভোটার ১৯০০।

পিওপির জরিপে দেখা যায়, নয় বছরে সরকারের জনপ্রিয়তা কমেছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৪৪ শতংশ ভোট পেয়েছিলো। নয় বছরে আওয়ামী লীগের ভোট কমেছে ৫ শতাংশ। অন্যদিকে বিএনপি ২০০৮ সালে ২৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিলো। বিএনপির ভোট ১০ শতাংশ বেড়েছে। জনপ্রিয়তা বাড়লেও বিএনপি এখনও জনপ্রিয়তায় আওয়ামী লীগের চেয়ে পিছিয়ে। তবে, পিওপির জরিপে দেখা যায়, ১১ শতাংশ ভোটার এখনও সিদ্ধান্তহীন। এই ভোটাররাই আগামী নির্বাচনের ফলাফলে প্রধান নিয়ামক শক্তি হবে।

পাবলিক অপিনিয়ন পুলের জরিপে দেখা যাচ্ছে, নিজের টাকায় পদ্মা সেতুকে উত্তরদাতারা সরকারের সবচেয়ে বড় সাফল্য মনে করছেন। ৮২ ভাগ উত্তর দাতা মনে করেন, এটি সরকারের এক নম্বর সফলতা। রোহিঙ্গা ইস্যুকে সরকারের সফলতা মনে করেন ৭২ ভাগ উত্তর দাতা। ৫৪ ভাগ উত্তর দাতা জঙ্গি দমনকে সরকারের প্রধান সাফল্য মনে করে। সরকার উন্নয়নের কথা বললেও মাত্র ২৩ ভাগ উত্তর দাতা উন্নয়নকে প্রধান সাফল্য হিসেবে বিবেচনায় করেছেন।

পিওপির জরিপে দেশের মানুষ দুর্নীতি দমনে ব্যর্থতাকে সরকারের এক নম্বর ব্যর্থতা মনে করে। ৮৭ ভাগ উত্তর দাতা মনে করে সরকার দুর্নীতি দমনে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি সরকারের দ্বিতীয় ব্যর্থতা হিসেবে জরিপে চিহ্নিত হয়েছে। ৭৬ ভাগ উত্তর দাতা বলেছেন সরকার দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। গুম এবং অপহরণ সরকারের তৃতীয় ব্যর্থতা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ৬১ ভাগ উত্তর দাতা বলেন, গুম এবং অপহরণ বেড়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং শিক্ষার মান সরকারের চতুর্থ ব্যর্থতা হিসেবে জনমত জরিপে উঠে এসেছে। ৫০ ভাগ উত্তর দাতা মনে করেন, শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকার ব্যর্থ।

পাবলিক অপিনিয়ন পুল (পিওপি) একটি আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা। মার্কিনভিত্তিক এই জরিপ সংস্থাটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর এই জরিপটি বাংলাদেশে অবস্থানরত তিনটি দূতাবাসের যৌথ অর্থায়নে করেছে।

বিএনপি-জামায়াত দূরত্ব কমেনি

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উপনির্বাচনে আজকেই দলের মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করবে বিএনপি। ডিএনসিসি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন আগে জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তারই ধারাবাহিকতায় আজ রাতে দলের নীতি-নির্ধারক ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডেকেছেন তিনি।

মেয়র প্রার্থী মনোনয়নকে প্রধান এজেন্ডা করে আহূত এ বৈঠকেই বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত মঙ্গলবার নয়া পল্টনে সাংবাদিকদের কাছে এমন তথ্য জানিয়ে বলেছিলেন, ‘আগামী শনিবার দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় আমাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।’

এদিকে জোটবদ্ধ রাজনীতি করলেও ডিএনসিসি উপনির্বাচনে তফসিল ঘোষণার আগেই নিজেদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে জামায়াত। বিষয়টি বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে যেমন ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে তেমনি টানাপড়েন তৈরি করেছে ২০ দলে।

সোমবার অনুষ্ঠিত ২০ দলীয় জোটের বৈঠকেও বিষয়টি উঠেছিল। জামায়াতের প্রার্থী ঘোষণায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন জোট শরিকদের কেউ কেউ। বৈঠকে উপস্থিত জামায়াতের প্রতিনিধি বলেছিলেন, ‘জোটের সিদ্ধান্ত তার দল মেনে নেবে। তবে প্রার্থীর বিষয়টি তার পক্ষে সেখানেই ফয়সালা দেয়া সম্ভব নয়। তিনি দলের নেতাদের কাছে বৈঠকের বার্তা পৌঁছে দেবেন।’

তবে সে বৈঠকের শুরুতেই শরিক দলের নেতারা জোটগতভাবে একক প্রার্থীর পক্ষে মতামত ও খালেদা জিয়ার ওপর প্রার্থী চূড়ান্ত করার দায়িত্ব দেন। পরদিন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ আলাদা দুইটি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘২০ দলের সভায় জোটগতভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। জোট নেতারা খালেদা জিয়াকে প্রার্থী নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছেন। ডিএনসিসি নির্বাচনে মেয়র প?দে ২০ দলীয় জোটের একজন অভিন্ন প্রার্থী হবেন।’

কিন্তু সুতোয় ঝুলছে মেয়র পদে জোটগতভাবে অভিন্ন প্রার্থী দেয়ার বিষয়টি। কারণ বৈঠকের পরও নিজ দলের প্রার্থী প্রশ্নে অনড় অবস্থানে রয়েছে জামায়াত। দলটির মহানগর উত্তরের আমীর সেলিম উদ্দিন ঘরোয়াভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, এখনই সব কিছুর ফায়সালা করতে চায় জামায়াত।

তাই তারা বলছে, ডিএনসিসিতে আমরা অংশ নেব না। আমরা চাই সংসদ নির্বাচনে আমাদের ন্যায্য হিস্যা। ৭০টি আসন তারা এখনই নিশ্চিত করতে চায়। এর মধ্যে বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের আসনও রয়েছে। বিশেষ করে সিলেট-১ আসনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানের ব্যাপারে তারা ছাড় দিতে নারাজ। অন্যদিকে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের অনেকেই চাচ্ছেন যা হওয়ার এখনই হোক।

সংসদ নির্বাচনের আগে ঝামেলা দলের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আওয়ামী লীগ যেমন হেফাজতের দাবির কাছে অসহায়-বিএনপিও জামায়াতের কাছে। উল্লেখ্য, নানা ইস্যুতে বেশকিছু দিন ধরেই বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে।

এদিকে ডিএনসিসি উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেও আওয়ামী লীগ-বিএনপি কোনো দলই ঘোষণা করেনি মেয়র পদে প্রার্থীর নাম। এ ব্যাপারে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, ডিএনসিসি নির্বাচনে সরকারের আন্তরিক প্রশ্ন এবং সংশয় রয়েছে তাদের। তা ছাড়া কৌশলগত কারণেই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর নিজেদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে চায় তারা।

তবে গতরাতে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক দল, নির্বাচনমুখী দল। নির্বাচন কমিশন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। সারা দেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে বিএনপি অংশ নিয়েছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন উপনির্বাচনেও আমরা অংশ নিতে চাই। কিন্তু সরকারই ঠিক করবে তারা সত্যিকার অর্থে নির্বাচন করতে চায় কিনা? তারা যদি ফলাফল নিয়ে কোনো কৌশল নিতে চায় সেটা কিন্তু ভিন্ন কথা।

দলের প্রার্থী চূড়ান্তকরণ নিয়ে গয়েশ্বর রায় বলেন, আজকে (শনিবার) আমাদের দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক রয়েছে। বিষয়টি আজই চূড়ান্ত হতে পারে। ওদিকে ডিএনসিসি উপনির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে আলোচনার টেবিলে সবার উপরে রয়েছে বিগত নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। দলের সবুজ সংকেত পাওয়ার আগে প্রচারণার মাঠে মুখ খুলেননি তিনি।

তবে নেতাকর্মীদের আলোচনা ও সমর্থকদের মুখে মুখে ফিরছে তার নাম। এ ছাড়া দলের সহ প্রকাশনা সম্পাদক ও এমবিএ অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব শাকিল ওয়াহেদ সুমন মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

মানবজমিন

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin