khaleda_zia

অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিন, নির্দেশ খালেদার

দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ সকল কোন্দল দ্রুত সমাধান করে শিগগিরই সংগঠিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। শনিবার দিনগত রাতে দলের ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ নির্দেশ দেন তিনি।

চেয়ারপারসনের গুলশানে রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সোয়া দুই ঘণ্টার এ বৈঠক রাত পৌনে ১২টায় শেষ হয়। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চান খালেদা জিয়া। তাই সফলতার দুয়ারে যেতে প্রধান বাধা অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে দ্রুত মিটমাট করতে চান তিনি। এ লক্ষ্যে ভাইস চেয়ারম্যানদেরকে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট জেলায় গিয়ে নেতাকর্মীদের অভিযোগ শুনে শিগগিরই সমাধানের নির্দেশ দিয়েছেন।

বৈঠকে অংশ নেয়া বরকত উল্লাহ বুলু জাগো নিউজকে জানান, টানা ২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা বৈঠকে সাংগঠনিক বিভিন্ন দিক নিয়ে অালোচনা হয়েছে। সংগঠনকে কিভাবে আরও গতিশীল করা যায় এ জন্য উন্মুক্ত অালোচনা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভাইস চেয়ারম্যান জানান, যেসব থানা, উপজেলা ও জেলাতে নিজেদের মধ্যে কোন্দল আছে, গ্রুপিং আছে -এই বিরোধ দ্রুত মিটিয়ে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন খালেদা জিয়া।

তিনি আরও বলেন, যেসব জেলা ও উপজেলায় এখনো নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়নি সেসব জেলা ও উপজেলায় শিগগিরই নতুন কমিটি ঘোষণার কথা বলেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া আগামী নির্বাচনের জন্য দলকে প্রস্তুত করতে সাংগঠনিকভাবে আরও শক্তিশালী করারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরও এক ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বৈঠকে ম্যাডাম বলেছেন আমরা আগামী নির্বাচনে যেতে চাই, তবে শেখ হাসিনার অধীনে নয়। নিরপেক্ষ নির্দলীয় সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ থাকবে, ইভিএম থাকবে না।

সহায়ক সরকারের দাবি মেনে নেয়া না হলে বিকল্প কী ভাবছেন খালেদা জিয়া -এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই দাবি আদায়ের প্রেক্ষাপট তৈরি করতেই সাংগঠনিকভাবে শীর্ষ পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত জোর দেয়া হচ্ছে। এ জন্য সংগঠনকে আরও মজবুত করতে হবে।

বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপির লক্ষ্য হচ্ছে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা। বৈঠকে দ্রব্যমূল্যের কষাঘাত, গুম-খুন-অপহরণ, অর্থনীতিতে লুটপাট অরাজকতা এসব নিয়ে আলাপ হলেও জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে সুনির্দিষ্ট কোনো কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা হয়নি।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম অালমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান এম মোর্শেদ খান, আবদুল্লাহ আল নোমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, শামসুজ্জামান দুদু, আহমদ আজম খান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মো. শাজাহান, নিতাই রায় চৌধুরী, শওকত মাহমুদসহ ২৪ জন উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকায় ক্ষমতাধর চার পররাষ্ট্রমন্ত্রী – কেন আসলেন তারা?

বিশ্ব ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা চীন, জাপান, সুইডেন ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী একই সঙ্গে ঢাকায় অবস্থান করছেন। গতকাল সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তারা ঢাকা এসে পৌঁছান।

সফরে এসেছে মার্কিন সিনেটর ও কংগ্রেসম্যানদের একটি প্রতিনিধি দলও। আজ ভোরে এসে পৌঁছবেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে পরিচিত ইইউ হাই-রিপ্রেজেন্টেটিভ। অতিথি জাপান, সুইডেন ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইইউ প্রতিনিধিকে নিয়ে আজ একসঙ্গে কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাচ্ছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

গতকাল দুপুরের আগে আগে বিশেষ বিমানে ঢাকা এসে পৌঁছান চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। রাত ৮টার পরপরই ঢাকার হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশেষ বিমানে পৌঁছান জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল। এর ঘণ্টাখানেক পর আসেন সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারগট ওয়ালস্টার। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারা কোনো মধ্যরাত ১২টার পরপরই পৌঁছান ঢাকায়।

আজ ভোরে পৌঁছাবেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক হাই-রিপ্রেজেন্টেটিভ ফেদেরিকা মোগেরিনি। পরে আজ সকাল ১০টার দিকে হেলিকপ্টারে করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কক্সবাজার যাবেন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারা কোনো, জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল, সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারগট ওয়ালস্টার ও ইইউ হাই-রিপ্রেজেন্টেটিভ ফেদেরিকা মোগেরিনি।

একই সময়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ঢাকায় অবস্থান করলেও তিনি কক্সকাজার পরিদর্শনে যাবেন না। অন্যদিকে গতকাল দুপুরের আগে ঢাকা পৌঁছানোর পর সরাসরি কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেন দুই মার্কিন সিনেটর জেফ মার্কলে ও রিচার্ড ডারবিনের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের মার্কিন প্রতিনিধি দল। এই দলে আছেন আরও তিন কংগ্রেসম্যান এবং চারজন স্টাফার।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উখিয়ার ক্যাম্পে সময় কাটাবেন জাপান, সুইডেন, জার্মানি ও ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সচিব, চিফ অব প্রটোকল এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকরা তাদের সঙ্গে থেকে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার ত্রাণ তত্পরতা ঘুরে দেখাবেন। সরাসরি আশ্রিত রোহিঙ্গাদের কথাও শুনবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। বিকালে ঢাকায় ফিরে তারা পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ-বৈঠক করবেন। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।

পরে আজ সন্ধ্যায়ই নিজ নিজ বিশেষ বিমানে মিয়ানমারের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন জাপান, সুইডেন ও ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। তাদের বিদায় জানিয়ে রাত ৯টার দিকে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিশেষ বিমানে মিয়ানমারের উদ্দেশে রওনা দেবেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। একই দিন সফর শেষে ঢাকা ছাড়বেন মার্কিন প্রতিনিধিরাও। এর আগে তারা কক্সবাজার থেকে ঢাকা ফিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে সাক্ষাৎ, বৈঠক ও মতবিনিময় করবেন।

ঢাকায় চার পররাষ্ট্রমন্ত্রী : মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের কাছে পাওয়া সব তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন সে দেশের প্রতিনিধিরা। গতকাল কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর জেফ মার্কলে। গতকাল বেলা ১১টার কিছু পরে আমেরিকার ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছায়। এর মধ্যে দুজন সিনেটর ও তিনজন কংগ্রেসম্যান ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। উখিয়া উপজেলার বালুখালী ক্যাম্পে গিয়ে সেখানে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলাপ করেন তারা।

এ সময় জেফ মার্কলে সাংবাদিকদের জানান, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে নির্যাতনের নানা তথ্য পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ সফর শেষে তারা মিয়ানমারে যাবেন। ওখান থেকেও তথ্য সংগ্রহ করে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে তা কংগ্রেসে জানাবেন তারা।

উল্লেখ্য, মার্কিন প্রতিনিধিরা শুক্রবার রাতে ঢাকায় পৌঁছান, কক্সবাজার আসেন গতকাল সকালে। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি জানতে চীন ও জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদেরও গতকাল ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। এ ছাড়া আজ বাংলাদেশ সফরে আসছেন জার্মানি ও সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক মন্ত্রী।

উৎসঃ   বিডি-প্রতিদিন

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin